মোঃ ইব্রাহিম আলী, সিংড়া (নাটোর) প্রতিনিধি
নাটোরের সিংড়ায় গর্ভবতী স্ত্রীর চিকিৎসা ব্যয় বহন করতে ভ্যানচালককে হত্যার পর ভ্যান চুরি করে মরদেহ পানিতে ভাসিয়ে দেয় দুই যুবক। গত বৃহস্পতিবার (৩১ জুলাই) রাতে মরদেহ উদ্ধারের পর শুক্রবার (১ আগস্ট) রাতে এই ঘটনার মুল হোতা দুই আসামিকে গ্রেফতার করেছে র্যাব।
শনিবার (২ আগস্ট) বেলা সাড়ে এগারটায় এক সংবাদ সম্মেলনে তথ্য জানায় রাজশাহী র্যাব-৫।
র্যাব-৫ এর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মোহাম্মদ মাসুদ পারভেজ বলেন, নিহত ভ্যানচালক জিহাদ, আসামী সাগর প্রামানিক ও সুলতান প্রামানিক পূর্ব পরিচিত। তারা একসঙ্গে আড্ডা দিতেন।
র্যাবের জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতারকৃতরা জানায়, নিহত ব্যক্তির নাম জিহাদ, যার সঙ্গে তাদের চার মাস আগে পরিচয় হয়। আড্ডা দেওয়া এবং গাঁজা সেবনের মাধ্যমে তাদের মধ্যে বন্ধুত্ব গড়ে ওঠে। সম্প্রতি আর্থিক সংকটে পড়েন সাগর, যার স্ত্রী অন্তঃসত্ত্বা। সুলতানও একই ধরনের অর্থকষ্টে ছিলেন।
দুই সপ্তাহ ধরে পরিকল্পনা করে তারা জিহাদকে হত্যার মাধ্যমে তার ব্যাটারিচালিত ভ্যানটি বিক্রি করার সিদ্ধান্ত নেয়। পরিকল্পনা অনুযায়ী, ৩০ জুলাই সন্ধ্যায় তারা চৌগ্রাম বাজারে জিহাদের সঙ্গে দেখা করে এবং পরে সিংড়া বাজার থেকে গোপনে চেতনানাশক ট্যাবলেট সংগ্রহ করে। সেটি স্পিড ড্রিংকের সঙ্গে মিশিয়ে জিহাদকে খাওয়ালে সে অচেতন হয়ে পড়ে।
পরে রাত সাড়ে ৯টার দিকে ইটালি ইউনিয়নের ইটালি-ইন্দ্রাসন গ্রামের মাঝামাঝি ‘পাজাগাড়ি’ নামক স্থানে নিয়ে গিয়ে পুরনো ভ্যানের টায়ারের টিউব দিয়ে জিহাদকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে। হত্যার পর লাশটি বন্যার পানিতে ফেলে দেওয়া হয়।
পরদিন রাতে সিংড়ার ইটালি ইউনিয়নের কলেজপাড়া থেকে তার মরদেহ উদ্ধার হয়। পরে র্যাব এ নিয়ে ছায়া তদন্ত শুরু করে। আটক করে নাটোরের সিংড়ার বড়িয়া গ্রামের সাগর প্রামানিক ও সুলতান প্রামানিককে। উদ্ধার করে ভ্যান এবং মোবাইল।
আটকের পর আসামিরা হত্যার কথা স্বীকার করেছে বলেও জানান র্যাব।
র্যাব জানায়, হত্যা মামলায় তাদের নাটোরের সিংড়া থানায় সোপর্দ করা হয়েছে।