সংস্কার কমিশনের ১৩ প্রস্তাবের মধ্যে ১১ টিতে দ্বিমত পোষণ করেছে বিএনপি

প্রকাশক: Dainik Jagroto Matrivumi
প্রকাশ: 2 days ago

অনলাইন ডেস্ক.

সংস্কার কমিশনের ১৩ প্রস্তাবের মধ্যে ১১ টিতে দ্বিমত পোষণ করেছে বিএনপি। আনুপাতিক উচ্চকক্ষ ও এনসিসি গঠন এবং প্রধানমন্ত্রী ক্ষমতার হ্রাসের যেসব সুপারিশকে মৌলিক সংস্কার বলা হচ্ছে সেগুলোতে প্রধান প্রধান দল পুরোপুরি বিপরীত অবস্থানে রয়েছে। রাষ্ট্রের মৌলিক সংস্কারে রাজনৈতিক দলগুলো এখনো একমত হতে পারেনি। কিভাবে সংস্কারের সুপারিশ বাস্তবায়ন করা হবে তা নিয়েও তাদের মধ্যে ভিন্ন মত রয়েছে।

কমিশন সুপারিশ করেছিল আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুনালে শেখ হাসিনা সহ আওয়ামী লীগের
নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে মানবতা বিরোধী মামলা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে আদালত অভিযোগপত্র গ্রহণ করলে তারা দন্ডিত হওয়ার আগেই নির্বাচনে অযোগ্য হবেন। তবে এই সুপারিশে একমত নয় বিএনপি। এনসিপি তাদের
অবস্থান স্পষ্ট করেনি। আর জামাত কমিশনের সুপারিশে একমত হয়েছে।

প্রধানমন্ত্রীর মেয়াদ ও ক্ষমতা নিয়ে কমিশন প্রস্তাব করেছে-কেউ দুইবারে বেশি প্রধানমন্ত্রী হতে পারবেন না। তবে
এতে বিএনপি রাজি নয়। দলটি চায় কেউ টানা দুইবারে বেশি প্রধানমন্ত্রী হতে পারবেন না, একবার বিরতির পর আবার প্রধানমন্ত্রী হতে পারবেন। বিএনপির এই অবস্থানের কারণে কমিশন সংলাপে বলেছে টানা দুইবার এবং জীবনে তিনবারে বেশি প্রধানমন্ত্রী হওয়া যাবে না। তবে বিএনপি এতেও রাজি নয়। এনসিপি প্রধানমন্ত্রী পদ দুইবারে সীমাবদ্ধ করার সুপারিশে একমত।

প্রধানমন্ত্রী দলীয় প্রধান ও সংসদ নেতা হতে পারবেন না এ প্রস্তাবেও একমত এনসিপি। তবে এতে রাজি নয়
বিএনপি। দলটির অবস্থান হলো দল ঠিক করবে প্রধানমন্ত্রী, দলীয় প্রধান এবং সংসদ নেতা পদে থাকবেন কিনা। আর জামাতের অবস্থান হলো প্রধানমন্ত্রী, সংসদ নেতা কিংবা দলীয় প্রধান যেকোন একটি পদে থাকতে পারবেন।
সব দলই প্রধানমন্ত্রী ক্ষমতা কমাতে রাজি। জামাত চায় এনসিসির মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমতা কমানো হবে। এনসিপির প্রস্তাব প্রধানমন্ত্রী নন নির্বাহী ক্ষমতা প্রয়োগ করবে মন্ত্রিসভা। বিএনপির প্রস্তাব প্রধানমন্ত্রী কিছু ক্ষমতা আইনের মাধ্যমে রাষ্ট্রপতিকে দেওয়া হবে। অন্য দলগুলো মনে করে এতে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর মধ্যে দ্বন্ধ তৈরি হওয়ার ঝুঁকি থাকে। আবার দলীয় মনোনীত রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হলে আদতে প্রধানমন্ত্রীর কাছে থেকে যাবে ক্ষমতার চাবিকাঠি।

দৈনিক সমকালের এক প্রতিবেদনে এমন তথ্য উঠে আসে।

সংবিধান, নির্বাচন ব্যবস্থা, বিচার বিভাগ, জনপ্রশাসন এবং দুর্নীতি দমন কমিশন সংস্কারে ১৬৬ সুপারিশের অধিকাংশে দলগুলো একমত বা আংশিক একমত হয়েছে। প্রাপ্ত ভোটের অনুপাতে সংসদের প্রস্তাবিত উচ্চকক্ষের আসন বন্টন, প্রধানমন্ত্রী ক্ষমতা কমাতে জাতীয় সাংবিধানিক কাউন্সিল গঠন, প্রধানমন্ত্রী পদের মেয়াদ দুইবার করা সহ মৌলিক সংস্কারে এখনো একমত হতে পারেনি দলগুলো।

ঐক্যমত কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রিয়াদ জানান, দলগুলোর মধ্যে ঐক্যমত প্রতিষ্ঠায় দ্বিতীয় ধাপে সংলাপ শুরু হবে। প্রথম ধাপের সংলাপে ৩৩ টি দল ও জোট আন্তরিকতার সঙ্গে অংশ নিয়েছে। যেসব মৌলিক
জায়গায় ভিন্ন মত রয়েছে সেগুলোতে ঐক্যমতে পৌঁছাতে দলগুলোকে ছাড় দিতে হবে।

  • সংস্কার কমিশনের ১৩ প্রস্তাবের মধ্যে ১১ টিতে দ্বিমত পোষণ করেছে বিএনপি