ভারতের রাজনৈতিক অঙ্গনে দৃশ্যমান দলাদলির পাশাপাশি রয়েছে এক অদ্ভুত মিল। দেশটির রাজনীতিতে বহুল আলোচিত তিন নেতা নরেন্দ্র মোদী, রাহুল গান্ধী ও মমতা বন্দোপাধ্যায়। তিনজনেই নিজেদের রাজনৈতিক দলে বেশ সুপরিচিত এবং সফল রাজনীতিক। কিন্তু একটি বিষয় যা তাদের মধ্যে বেশ মিল রয়েছে। আর তা হলো তারা প্রত্যেকেই অবিবাহিত কিংবা সঙ্গীহীন জীবন যাপন করছেন।
ভারতীয় রাজনীতিতে নিজেদের যোগ্যতা ও দক্ষতায় দেশটির জনমনে স্থায়ী ছাপ ফেলেছেন এই নেতারা। কিন্তু এই জনপ্রিয় নেতাদের ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে সাধারণ মানুষের মধ্যে কৌতুহলও কম নয়। বিশেষ করে যখন বিষয়টি আসে অবিবাহিত বা সঙ্গীহীন জীবন প্রসঙ্গে।
তিনজনেই তাদের জীবন উৎসর্গ করেছেন জনসেবায়। কিন্তু ব্যক্তিজীবনে সঙ্গীহীন। রাজনীতির অঙ্গনে যখন ব্যক্তিগত জীবন একটি আলোচনার বিষয়বস্তু হয়ে দাঁড়ায় তখন এই নেতাদের ব্যক্তিজীবনও জনমনে প্রশ্নের জন্ম দেয়। কেন এই পথ বেছে নিলেন তারা? কেবল রাজনীতির প্রতি অঙ্গীকার নাকি এর পেছনে রয়েছে রাজনৈতিক জীবনের গভীর কোন উপলব্ধি?
নরেন্দ্র মোদী ভারতীয় জনতা পার্টি বা বিজেপির শীর্ষ নেতা এবং বর্তমান ভারতের প্রধানমন্ত্রী। গুজরাটের ছোট্ট শহরে জন্ম নেয়া নরেন্দ্র মোদী কৈশর থেকেই আরএসএস এর আদর্শে দীক্ষিত। যৌবনের শুরুতে বিয়ে হলেও রাজনীতির জন্য সংসার জীবন থেকে নিজেকে দূরে রেখেছেন। তার মতে জাতির সেবাই যেন তার শপথ। বিবাহিত জীবনের দায়িত্ব এবং রাজনৈতিক অঙ্গীকারের মধ্যে সমন্বয় করা কঠিন হওয়ায় তিনি বেছে নেন একাকী পথ।
ভারতীয় রাজনীতিতে আরেকটি বহুল আলোচিত নাম রাহুল গান্ধী। যিনি কংগ্রেসের অন্যতম প্রধান মুখ। এক আভিজাত রাজনৈতিক পরিবারের সন্তান। দাদী ইন্দিরা গান্ধী ও পিতা রাজীব গান্ধীর হত্যার পর রাজনৈতিক দায়িত্বের চাপে ব্যক্তিগত জীবন যেন তার কাছে বিলাসিতা। পরিবার হারানোর বেদনা এবং রাজনৈতিক চাপ তাকে বিয়ের বিষয়ে আরো সতর্ক করে তুলে। তার মতে জনগণের সেবা এবং রাজনৈতিক দায়িত্ব পালন সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ।
মমতা বন্দোপাধ্যায় ভারতের রাজনীতিতে এক শক্তিশালী নারী নেত্রী। যিনি বর্তমান পশ্চিম বাংলার মুখ্যমন্ত্রী। রাজনীতির প্রতি তার প্রেম ও নিষ্ঠার জন্য বিয়ে বা ব্যক্তিগত জীবনকে গুরুত্ব দেননি। বিয়ে বা সংসার করার পরিবর্তে তিনি পশ্চিমবঙ্গের মানুষের জন্য নিজেকে উৎসর্গ করেছেন। তার মতে জনসেবা এবং ব্যক্তিগত জীবনের মধ্যে ভারসাম্য রাখা বেশ কঠিন।
ভারতীয় রাজনীতিতে এমন অনেক দৃষ্টান্ত আছে যেখানে নেতারা ব্যক্তিগত জীবনের চেয়ে জনসেবাকে অগ্রাধিকার দিয়েছেন। রাজনীতির কুটচালে যখন সময় ও মনন ব্যয় করতে হয় তখন ব্যক্তিগত সম্পর্ককে সঠিক গুরুত্ব দেয়া প্রায়ই অসম্ভব। রাজনীতির মঞ্চে ব্যক্তিগত জীবন কখনো বিতর্কের কারণ হলেও এই নেতারা তাদের একক জীবনকে সাফল্যের পথে সহায়ক করে