অনলাইন ডেস্ক.
জুলাই আগস্ট গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী সময়ে দেশের বিভিন্ন ক্যান্টনমেন্টে আশ্রয় নেয়া সেই ৬২৬ জনের তালিকা প্রকাশ করেছে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী। বৃহস্পতিবার রাত ১০:৩০ টার দিকে সেনাবাহিনী ভেরিফাইড ফেসবুক পেজে এ তালিকা প্রকাশ করা হয়। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, জুলাই আগস্ট ২০২৪ এর ছাত্রজনতার গণঅভ্যুত্থানে বিগত সরকারের পতনের পর কতিপয় কুচক্রি মহলের তৎপরতায় সার্বিক আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির ব্যাপক অবনতি হয়। ফলে সরকারি দপ্তর, থানা সমূহে হামলা, রাজনৈতিক নেতাকর্মী ও সমর্থকদের উপর আক্রমণ ও ঘরবাড়িতে অগ্নিসংযোগ, মবজাস্টিস, চুরি, ডাকাতিসহ বিভিন্ন বিশৃঙ্খলা দেখা দেয়। এ ধরনের সংবেদনশীল ও নাজুক আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতিতে দেশের নাগরিকদের মনে নিরাপত্তাহীনতার জন্ম নেয়। এই অবস্থায় ঢাকাসহ দেশের প্রায় সব সেনানিবাসে প্রাণরক্ষার্থে কতিপয় রাজনৈতিক ব্যক্তিবর্গ সহ বিভিন্ন শ্রেণীপেশার নাগরিকরা আশ্রয় প্রার্থনা করেন। উদ্ভূত আকশ্বিক অস্থীতিশীলপরিস্থিতিতে সেনানিবাসী আশ্রয় প্রার্থীদের পরিচয় যাচাই বাছাই করার চাইতে তাদের জীবন রক্ষা প্রাধান্য পেয়েছিল।এই পরিপ্রেক্ষিতে 24 জন রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব, পাঁচজন বিচারক, ১৯ জন অসামরিক প্রশাসনের কর্মকর্তা, ৫১৫ জন পুলিশ কর্মকর্তা ও সদস্য, বিভিন্ন পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মকর্তাসহ বিভিধ ১২ জন ও ৫১ জন পরিবার পরিজনসহ সর্বমোট ৬২৬ জনকে বিভিন্ন সেনানিবাসে আশ্রয় দেয়া হয়েছিল। ওই সময়ে শুধু মানবিক দায়বদ্ধতার কারণে আইন বহির্ভূত হত্যাকাণ্ড থেকে আশ্রয় প্রার্থীদের জীবন রক্ষা করাই ছিল মুখ্য উদ্দেশ্য। পরিস্থিতি উন্নয়ন সাপেক্ষে আশ্রয় গ্রহণকারীদের বেশিরভাগই এক দুই দিনের মধ্যেই সেনানিবাস ত্যাগ করেন। এর মধ্যে পাঁচজনকে তাদের বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগের ভিত্তিতে যথাযথ আইনি প্রক্রিয়া অনুসরণ করে আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর নিকট হস্তান্তর করা হয়। সেনানিবাসে অবস্থানকারী ও আশ্রপ প্রার্থীদের ব্যাপারে গত ১৮ আগস্ট ২০২৪ তারিখে আইএসপিআর এর আনুষ্ঠানিক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে প্রকাশ করা হয় এবং একই দিনে ১৯৩ জন ব্যক্তিবর্গের একটি তালিকা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে প্রেরণ করা হয় যা ছিল একটি মীমাংশিত বিষয়। সেনানিবাসে আশ্রয়প্রার্থী এসব ব্যক্তি ও পরিবারের সদস্যদের নিরাপত্তা ও জীবন রক্ষার্থে মানবিক দৃষ্টিকোণ থেকে সামরিক আশ্রয় প্রদান করা হয়েছিল। তৎকালীন বিরাজমান নিরাপত্তা ও পরিস্থিতিতে আশ্রয় প্রার্থীদের জীবন বিপন্ন হওয়ার সমূহ সম্ভাবনা ছিল। কিন্তু দুঃখজনকভাবে কিছু স্বার্থনশী মহল উদ্দেশ্য প্রণীতভাবে বিভ্রান্তিকর সংবাদ সরিয়েছিল। সেনাবাহিনীর ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন করার পাশাপাশি জনগণের সঙ্গে দূরত্ব তৈরি করার অপচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছিল। এই পরিপ্রেক্ষিতে জুলাই আগস্ট গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী সেনানিবাসীর অভ্যন্তরে প্রাণ রক্ষার্থে আশ্রয় গ্রহণকারী ৬২৬ জন ব্যক্তিবর্গের একটি পূর্ণাঙ্গ তালিকা প্রবেশ করা হয়েছে। এই অবস্থায় সকলকে এ ধরনের বিভ্রান্তিমূলক অপপ্রচার থেকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানানো হচ্ছে। বাংলাদেশ সেনাবাহিনী দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষার পাশাপাশি পেশাদারিত্ব নিষ্ঠা ও আস্থার সাথে জাতির পাশে থাকার অঙ্গীকার পুনরব্যক্ত করেছে।