ফিলিস্তিন আমাদের ইমানের আয়না

প্রকাশক: Dainik Jagroto Matrivumi JM TV
প্রকাশ: 6 hours ago

নোয়াখালীর প্রতিনিধি,

যখন আগুন ঝরে আকাশ থেকে, ভূমি কেঁপে উঠে শিশুদের কান্নায়, তখন একটাই প্রশ্ন সামনে আসে— আমাদের হৃদয় কি সত্যিই কাঁপে না? ফিলিস্তিন, গাজা কিংবা লেবাননের রক্তাক্ত মাটি কেবল যুদ্ধের চিহ্ন নয়, বরং মুসলিম উম্মাহর নিস্তব্ধ আত্মপ্রবঞ্চনারও প্রতিচ্ছবি। দিনের পর দিন ইসরায়েল যে বর্বর নির্যাতন চালিয়ে যাচ্ছে ফিলিস্তিনিদের উপর, তা নিছক একটি ভূ-রাজনৈতিক দ্বন্দ্ব নয়; এটি একটি সুস্পষ্ট মানবিক, ধর্মীয় ও নৈতিক বিপর্যয়। পবিত্র মসজিদুল আকসা লাঞ্ছিত, বৃদ্ধদের প্রকাশ্যে হত্যা, কোলের শিশুদের আগুনে ঝলসে দেওয়া— এসব কি কেবল সংবাদপত্রের শিরোনাম, নাকি ঈমানবান হৃদয়গুলোকে জাগিয়ে তোলার জন্য এক কঠিন পরীক্ষা?
আজকের তথাকথিত সভ্য বিশ্ব যেখানে একচোখা নীতির আশ্রয় নিয়ে জালিমের পক্ষেই দাঁড়াচ্ছে, সেখানে মতপার্থক্য থাকা সত্ত্বেও ইরান রাষ্ট্র ধারাবাহিকভাবে ফিলিস্তিনের পক্ষে যে অবস্থান নিয়েছে, তা স্পষ্টতই চোখে পড়ার মতো। আমাদের মূল্যায়ন হওয়া উচিত ইসলামের দৃষ্টিকোণ থেকে— মাজহাব নয়, বরং উম্মাহর বৃহত্তর স্বার্থ ও ন্যায়বোধের আলোকে। এই সময়ে চোখ বন্ধ রাখা, নীরব থাকা, কেবল মজলুমদের দুঃখ বাড়ায় না; বরং জালিমদের সাহস যোগায়। যেসব মুসলমান নিজেদের ঈমানদার দাবি করেন, তাদের উচিত বুঝে নেওয়া— শুধু দোয়া নয়, আজ দরকার জাগ্রত হৃদয়, সাহসী কলম, এবং স্পষ্ট কণ্ঠস্বর।
আমরা যদি আজও চুপ থাকি, যদি কেবল দূর থেকে কান্না করি আর কিছু না করি— তবে আগামী প্রজন্মের ইতিহাসে আমাদের স্থান হবে এক আত্মকেন্দ্রিক, দায়িত্ববিমুখ জাতি হিসেবে। আজ প্রয়োজন হৃদয়ের অন্তস্তল থেকে একটি জাগরণ— যা চোখে জল, মুখে সত্য, আর কলমে প্রতিবাদের ভাষা নিয়ে আসে। ঈমান কেবল অনুভূতি নয়, এটি একটি অবস্থান। এবং সেই অবস্থান জালিমের বিরুদ্ধে এবং মজলুমের পাশে দাঁড়ানোর নাম। একটি উম্মাহ যখন চোখে দেখে না, কানে শোনে না, হৃদয়ে ব্যথা অনুভব করে না— তখন সে শুধু দুর্বল নয়, সে নিজের আত্মপরিচয় হারিয়ে ফেলে। তাই আজ দরকার— ব্যথিত নয়, জাগ্রত হৃদয়। দরকার এমন কলম, যা সত্য লিখতে ভয় পায় না। দরকার এমন কণ্ঠ, যা নির্দ্বিধায় বলে— “জুলুমের বিরুদ্ধে দাঁড়ানো ঈমানের দাবি।” আমরা যদি আজও চুপ থাকি, ইতিহাস আমাদের ক্ষমা করবে না।
জালিমের বিরুদ্ধে অবস্থান নেওয়া, মজলুমের পাশে দাঁড়ানো— এটাই প্রকৃত ঈমানের প্রকাশ।

হে আল্লাহ!
আপনি আমাদের অন্তরকে জাগ্রত করুন, ন্যায় ও ইনসাফের পথে পরিচালিত করুন, মুসলিম উম্মাহকে ঐক্যবদ্ধ করুন, এবং মজলুম ফিলিস্তিনিদের হেফাজত করুন ও বিজয় দিন। আমীন।