জনপ্রিয়

নারী পু-লিশের দিকে তাকিয়ে হাসছে আ-সামি, ভাইরাল ভিডিও’র ঘটনা কি সত্য?

প্রকাশক: Dainik Jagroto Matrivumi
প্রকাশ: 48 minutes ago

অনলাইন ডেস্ক.

এক নারী পুলিশ সদস্যের দিকে রোমান্টিক ভাবে তাকিয়ে হাসছে এক পুরুষ আসামী, তাকে ধরে রেখেছেন আরেক পুলিশ সদস্য। সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এমন একটি ভিডিও ভাইরাল হয়েছে। যার ফ্রেমে লেখা বিমানবন্দর থেকে গ্রেপ্তার সিঙ্গেল লীগের সভাপতি আসিফ আদনান। যা সত্যি ভেবে শেয়ারও করছেন অনেকে। সিঙ্গেলরা লিখছেন এমন পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হতে তারাও রাজি।

তবে ছড়িয়ে পড়া ওই ভিডিওর ঘটনা কি আসলেই সত্যি নাকি কোন টিভি সিরিজের দৃশ্য?

সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নারী পুলিশের দিকে তাকিয়ে আসামির হাসির একটি ভিডিও ভাইরাল হয়েছে। এতে দেখা যায় হাতে হাত কড়া পড়া এক ব্যক্তি পুলিশের পোশাক পরা এক নারীর দিকে বারবার তাকাচ্ছেন আর একটু পর পর রোমান্টিক হাসি হাসছেন। এসময় পাশেই থাকা পুলিশ এর পোশাক পরা অন্য এক পুরুষ তাকে বারবার বাধা দেওয়ার চেষ্টা করছেন আর অবশেষে ওই নারীও হেসে ওঠেন। ভিডিওটি প্রচার করে অনেকে সেটা বাস্তব ঘটনা বলে দাবি করছেন। আর সিঙ্গেলরা তা মজা করেই শেয়ারও করছেন। তবে বাস্তবে এমন ঘটনা ঘটেনি যে ভিডিওটি ভাইরাল হয়েছে তার দৃশ্যটি স্ক্রিপ্টেড।

২১ ডিসেম্বর বাংলাদেশী ফ্যাক্ট চেক বা তথ্য যাচাই সংস্থা রিউমার স্ক্যানার এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে। প্রতিবেদনে বলা হয় ওই নারী পুলিশের দিকে তাকিয়ে আসামির হাসি দেওয়ার ভিডিওটি কোন বাস্তব ঘটনা নয়। এটি দেশের একটি বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেলের ধারাবাহিক নাটকের শুটিং এর সময় ধারণ অভিনীত ভিডিও। এ বিষয়ে অনুসন্ধানের শুরুতে প্রাসঙ্গিক কিওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে আসিফ আদনান ব্রো নামের একটি ফেসবুক পেজে গত ৮ নভেম্বর ‘এ একটা কাজ হল’ শীর্ষক ক্যাপশনে প্রকাশিত একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। ওই ভিডিওটির সঙ্গে আলোচিত ভিডিওর হুবহু মিল পাওয়া যায় প্রতিবেদনে। আরো বলা হয়েছে ভিডিওটির সঙ্গে যুক্ত বিমানবন্দর থেকে গ্রেফতার সিঙ্গেল লীগের সভাপতি আদনান লেখা থেকে প্রতিয়মান হয় এটি মজার ছলে তৈরি একটি ভিডিও। এছাড়া ওই ফেসবুক পেজে প্রকাশিত বিভিন্ন ছবির সঙ্গে ভিডিওতে আসামির ভূমিকায় থাকা ব্যক্তির চেহারার মিল পাওয়া যায়। পরবর্তীতে আসিফ আদনানের ফেসবুক একাউন্টে গত ১৮ ডিসেম্বর ‘একদিন সকালে ঘুম থেকে উঠে দেখি আমি ভাইরাল’ শীর্ষক ক্যাপশনে প্রকাশিত একটি পোস্ট খুঁজে পাওয়া যায়।

এ বিষয়ে আসিফ আদনান জানান, তিনি উক্ত টেলিভিশনের ডিজিটাল ডিপার্টমেন্টে কর্মরত পাশাপাশি কন্টেন্টও তৈরি করে থাকেন। ভাইরাল হওয়া ওই ভিডিওটি নাটকের শুটিং এর ফাঁকে মজার ছলে নিজের জন্য তৈরি করেছিলেন তিনি।

এক ভিডিও বার্তায় তিনি সেই পুরুষ পুলিশ সদস্যের ভুমিকায় থাকা ফিরোজ ইসলাম নিয়ে বলেন, আমি সেই ভাইরাল আসামি আর ইনি হচ্ছেন আমার সাথে আছেন ফিরোজ ইসলাম যিনি ভাইরাল পুলিশ, তো আসলে গত দুইদিন ধরে যে ফেসবুকে যে ভিডিওটা ভাইরাল হয়েছে সেটা হচ্ছে আমার আর ভাইয়ের করা। তো অনেকে এটা নিয়ে অনেক আলোচনা সমালোচনা করছেন পুরা দেশব্যাপী। এটা ছড়ায়ে গেছে যে এটা কি আসল ঘটনা নাকি স্ক্রিপ্টেড নাকি কোন নাটকের অংশ? সেই ভিডিও বার্তায় পুলিশের ভূমিকায় থাকা ফিরোজ ইসলাম বলেন, এটা ধারাবাহিক প্রায় ১২০০ পর্বের একটা নাটক, সেই নাটকের শুটিং করতে গিয়ে আমরা আমাদের নিজেদের জন্য একটা কন্টেন্ট ক্রিয়েট করেছিলাম। সেই কন্টেন্টটাই আসলে হঠাৎ করে ভাইরাল হয়ে যায়। এটা আসলে কোন সিরিয়াস কোন ঘটনা না, সিরিয়াস কোন ইস্যু না, এটা স্ক্রিপ্টেড।

এছাড়া আসিফ আদনানের ফেসবুক পেজে গত ২০ ডিসেম্বর প্রকাশিত একটি পোস্টেও একই তথ্য নিশ্চিত হওয়া যায়। সুতরাং নারী পুলিশের দিকে তাকিয়ে আসামির হাসি দেওয়ার ওই ভিডিওর ঘটনাটি সম্পূর্ণ মিথ্যা ও স্ক্রিপ্টেড।

  • নারী পু-লিশের দিকে তাকিয়ে হাসছে আ-সামি