জনপ্রিয়

হারিয়ে যাচ্ছে গ্ৰাম বাংলার শীতের আমেজ

প্রকাশক: Dainik Jagroto Matrivumi
প্রকাশ: 4 weeks ago

মুহাম্মাদ মাইনুল ইসলাম

গ্রামবাংলার শীতের সকাল শুরু হতো কুয়াশা আর ধোঁয়াশার আচ্ছাদনে প্রকৃতির এক অপরূপ সৌন্দর্য প্রদর্শনের মধ্য দিয়ে, যেখানে মাঝেমধ্যে মনে হতো সাদা মেঘের রাশি পৃথিবীর বুকে নেমে এসেছে প্রকৃতির আলিঙ্গনে। কুয়াশার চাদরে আচ্ছাদিত সূর্য মামাও যেন শীতকাতুরে আলসেমির ছলে নিজেকে আড়ালে রাখে বেশ খানিকটা সময়। পূবের আকাশে মৃদু মিষ্টি কিরণমালার ছোঁয়ায় ভেজা দুর্বাঘাস আর শর্ষে ফুলের নীল দিগন্তে কি যে এক স্নিগ্ধতার মোহ ছিল, প্রকৃতি যেন নিজ হাতে তার সন্তানদের এর প্রভাত স্নান করিয়ে দিত। প্রকৃতির হাজারো আয়োজনের ভিতরেও জনপদের মানুষগুলোর জীবনের কর্মব্যস্ততা কখনোই থেমে থাকেনি, শীতের প্রবল তীব্রতা সত্ত্বেও মায়ের বকুনির ভয়ে লেপের উষ্ণতাকে উপেক্ষা করে দল বেঁধে সবাই চলে যেতাম মাদ্রাসায়, চারপাশে পাখিদের কলরব আর সেই সাথে হুজুরের মুখের শ্রুতি মধুর তিলাওয়াত কি যে এক আবেগঘন ভালো লাগা ছিল।

সে সময় দেখা যেত শীতের শুরুতেই মানুষ শীত নিবারক বস্ত্র পরিধান করতো। রাস্তাঘাটে চলার পথে বিভিন্ন রং বেরংঙের জ্যাকেট সোয়েটার মাফলার পরিধান করতে দেখা যেত। বস্ত্রের দোকান গুলোতে থাকতো মানুষের উপচে পড়া ভীড়। হরেক রকম কাস্টমার দেখা যেত দোকান গুলোতে। লেপ তোশকের দোকানীরাও পার করতো ব্যস্ত সময়। সন্ধ্যার পরে যুবকেরা লাইট জালিয়ে ব্যাট মিন্টন খেলায় থাকতো ব্যস্ত।গ্রামের মেঠোপথ দিয়ে হেটে গেলে বাতাসে ভেসে আসতো গ্রামবাংলার ঐতিহ্যবাহী খেজুরের রসের মৃদু গন্ধ। চারদিকে দেখা যেত হরেক রকম পিঠার উৎসব। আবার কেউ এই রস দিয়ে রান্না করতো পায়েস। সেই পায়েসের স্বাদ যে কত মধুর তা এই পায়েস না খাওয়া শহরের মানুষগুলোকে বুঝানো যাবে না। কিন্তু সেই পায়েসের স্বাদ এখন কোথায়? তখন ছিলো যৌথ পরিবার। শীতকালীন ছুটিতে সবাই একসাথে নানু বাড়ি বেড়াতে যেত।সব আত্নীয়স্বজন এক জায়গায় হতো। ছোট ছোট ছেলেমেয়েরা সকালে সন্ধ্যায় খট কুটো দিয়ে আগুন জ্বালিয়ে একসাথে আগুন পোহাতো।কত যে সেই আনন্দ তা আধুনিক যুগের মানুষকে বুঝানো যাবে না। কারণ তারা এখন ইন্টারনেটভিত্তিক। নেট জগতে তাদের বসবাস।

যাইহোক সব মিলিয়ে বলা চলে সেই যুগের আনন্দ এখন আর এই আধুনিক যুগের মানুষ পাবে না

  • হারিয়ে যাচ্ছে গ্ৰাম বাংলার শীতের আমেজ