জনপ্রিয়

সংস্কার কমিশনের কোরআন ও সুন্নাহ বিরোধী প্রতিবেদন বাতিলের দাবিতে হেফাজত ইসলামের সমাবেশ ও বিক্ষোভ মিছিল

প্রকাশক: Dainik Jagroto Matrivumi
প্রকাশ: 6 hours ago

পাবনা জেলা প্রতিনিধি

পাবনায় ৩০ এপ্রিল বেলা ১২ টায় পাবনা প্রেসক্লাবের সামনে হেফাজতে ইসলামি বাংলাদেশের সংস্কার কমিশনের কোরআন ও সুন্নাহ বিরোধী প্রতিবেদন বাতিলের দাবিতে সমাবেশ ও বিক্ষোভ মিছিল করেছে।

দেশে চলমান সংস্কার কার্যক্রমের অংশ হিসেবে গঠিত বিভিন্ন কমিশনের মধ্যে নারী বিষয়ক সংস্কার কমিশন’। গত ১৯ এপ্রিল ২০২৫ তারিখে প্রধান উপদেষ্টার কাছে তাদের প্রস্তাবিত প্রতিবেদন জমা দিয়েছে।উক্ত প্রতিবেদনে কুরআন ও সুন্নাহ বিরোধী একাধিক সুপারিশ উঠে এসেছে, যা দেখে এদেশের ইসলামপ্রিয় তৌহিদী জনতা গভীরভাবে মর্মাহত ও ক্ষুব্ধ হয়েছে। ইতিমধ্যে দেশের শীর্ষ আলেম সমাজ এই প্রতিবেদন প্রত্যাখ্যান করে কমিশনসহ তাদের প্রতিবেদন বাতিলের জোর দাবি জানিয়েছেন।

প্রতিবেদনে ইসলামের মৌলিক শিক্ষা ও বিধানের বিরুদ্ধে যে ধারা ও মন্তব্যগুলো উঠে এসেছে,সেগুলো তুলে ধরা হলো।

১. নারীদের সম্পত্তির সমান উত্তরাধিকার নিশ্চিত করতে মুসলিম ও হিন্দু উত্তরাধিকার আইন সংশোধন জরুরি। যা সরাসরি কুরআন ও সুন্নাহর সুনির্দিষ্ট বিধানের বিরোধিতা।

২. বিবাহ, তালাক, জন্ম-মৃত্যুর তথ্য ডিজিটাল পদ্ধতিতে আদান-প্রদান করে কম বয়সে বিবাহ ও বহুবিবাহ প্রতিরোধের উদ্যোগ,যা ইসলামী শরিয়তের সাথে স্পষ্ট সাংঘর্ষিক এবং কুরআন ও সুন্নাহ পরিপন্থী।

৩. বিবাহ, তালাক, ভরণপোষণ, দেনমোহর, অভিভাবকত্ব, নাগরিকত্বসহ বিভিন্ন বিষয়ে নারী-পুরুষের সমান অধিকার প্রতিষ্ঠার দাবির মাধ্যমে ইসলামী আইনের নারি-পুরুষের স্বতন্ত্র ভূমিকা ও দায়িত্ব অস্বীকার করা হয়েছে।

৪. রাষ্ট্র যেহেতু একটি ইহজাগতিক সত্তা, তাই ধর্মীয় বিধান অনুসরণ করে সংবিধান শুরু হওয়া উচিত নয়। এটি ইসলামকে রাষ্ট্র থেকে পৃথক করার চরম আত্মঘাতী অভিপ্রায়।

৫. যৌনকর্মীদের শ্রমিক’ হিসেবে স্বীকৃতির প্রস্তাব নারীর মর্যাদাকে পদদলিত করারমতো জঘন্য ষড়যন্ত্র।

৬. বিবাহ, বিবাহ বিচ্ছেদ ও ভরণপোষণে ধর্মীয় আইন বাধ্যতামূলক হওয়ায় নারীরা বৈষম্যের শিকার হচ্ছেন। এই বক্তব্যে সরাসরি আল্লাহর বিধানকে বৈষম্যমূলক ও সমাজকে পশ্চাৎপদ করে রাখার উপাদান হিসেবে উপস্থাপন করা হয়েছে।

এই ধরনের মন্তব্য শুধু কুরআন ও সুন্নাহর প্রতি অবমাননাকর নয়, বরং রাষ্ট্রীয়ভাবে ইসলামবিরোধী মনোভাব প্রতিষ্ঠার নগ্ন চেষ্টা। এমন বক্তব্য অতীতের চরম ইসলামবিদ্বেষী ফ্যাসিষ্ট সরকারের শাসনামলেও শোনা যায়নি বলে মনে করে হেফাজতে ইসলামি বাংলাদেশ। বর্তমানে এই কমিশন ইসলামের শেষ চিহ্নটুকুও মুছে ফেলার চক্রান্তে লিপ্ত হয়েছে।

১৯৭২ সালের সংবিধান রচনার পর এই প্রথমবার বৃহৎ পরিসরে রাষ্ট্রীয় সংস্কার প্রস্তাব আসছে। এ সময় যদি ইসলামের মৌলিক বিধান রক্ষা করা না যায়, তাহলে ভবিষ্যতের বাংলাদেশে ইসলাম ও মুসলিমদের অস্তিত্ব সংকটে পড়বে।

হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ ইতোমধ্যে এই কমিশনের ব্যাপারে সুস্পষ্টভাবে নিজেদের অবস্থান পরিষ্কার জানিয়ে দিয়েছে। এই কমিশনে দেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ ধর্মপ্রাণ নারী সমাজের কোনো প্রতিনিধিত্ব নেই, বরং ইসলামবিরোধী ও পশ্চিমা মতাদর্শে বিশ্বাসী একটি বিশেষ শ্রেণির নারীদের দিয়ে এই কমিশন গঠিত হয়েছে। যারা আজ পরিবার ও সমাজ ব্যবস্থা ধ্বংসে লিপ্ত।সে কারণে হেফাজতে ইসলাম তাদের প্রতিবেদন ঘৃণাভরে প্রত্যাখ্যান করেছে। দ্রুত সংস্কার কমিশনসহ প্রতিবেদন বাতিল করতে হবে। পাশাপাশি নতুনভাবে ইসলামী ধর্মমনা ও সুস্থ সংস্কৃতির অনুগামী প্রতিনিধিদের সমন্বয়ে কমিশন গঠনের দাবি জানিয়ে হেফাজতে ইসলামি বাংলাদেশ পাবনায় মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।

  • সংস্কার কমিশনের কোরআন ও সুন্নাহ বিরোধী প্রতিবেদন বাতিলের দাবিতে হেফাজত ইসলামের সমাবেশ ও বিক্ষোভ মিছিল