রিয়াজুল হক সাগর, রংপুর
রংপুর নগরীতে চাঁদা না দেয়ায় ফুটপাতের দোকান পাট ভাংচুর ও ব্যবসা বন্ধ করে দেয়ার প্রতিবাদে মঙ্গলবার (৫ নভেম্বর) রাতে লাঠি হাতে কেরামতিয়া মসজিদের সামনে সড়ক অবরোধ করে ফুটপাতের ব্যবসায়িরা। চাঁদাবাজদের গ্রেফতার না করলে আত্মাহুতির হুমকি দিয়েছে অবরোধকারীরা। প্রায় দেড় ঘণ্টা পর নিরাপদে চাঁদাছাড়াই ব্যবসা নিশ্চিতে পুলিশ ও সেনাবাহিনীর আশ্বাসে তারা অবরোধ তুলে নেয়।
মঙ্গলবার (৫ নভেম্বর) রাত ৯টা থেকে রংপুর নগরীর কারামতিয়া মসজিদ মোড়ে অবরোধ করে বিক্ষোভ করে সেখানকার পিঠা, চা,পান, জুস সহ ফুটপাতের ব্যবসায়ীরা। এ সময় তাদের সাথে যোগ দেয় পরিবারের লোকজন। তারা লাঠি হাতে বিক্ষোভ করতে থাকে। অবরোধকারী ফুটপাতের দোকানী লাভলী বেগম জানান, ‘আমরা এই মোড়ের মধ্যে ফুটপাতে চা বিক্রি করে খাই। স্থানীয় মুনশিপাড়ার কিছু ছেলে সহ কয়েকজন যুবক প্রতিদিনই আমাদের দোকানে এসে ২০-৩০ টাকার চা বিড়ি খায়। টাকা দেয় না। আমরা কিছু বলিও না। কিন্তু সোমবার (৪ নভেম্বর) থেকে বায়না ধরেছে ওদেরকে দোকান প্রতি প্রতিদিন ২৫০ টাকা করে চাঁদা দিতেই হবে। আমরা গরিব মানুষ। দিন আড়াইশ টাকা কামাই করা আমাদের জন্য কস্টকর। তাদের কিভাবে চাঁদা দিবো। তারা আমাদের হুমকি দিয়েছে। টাকা না দিলে কেউ দোকান খুলতে পারবে না। আমরা ভয়ে সন্ধায় দোকান খুলেছি। এশার নামাজের পর ওরা এসে টাকার দাবি করতে থাকে। তখন আমরা দিতে অস্বীকৃতি জানালে ওরা আমাদের দোকানে দোকানে হামলা চালায়।’এরপর আমরা সবাই মিলে তাদের বাধা দেই। আমাদের সাথে এলাকার লোকজন আসে। তখন তারা পালিয়ে যায়। এরই প্রেক্ষিতে এখন আমরা বিক্ষোভ করতেছি। আমাদের কর্মের নিরাপত্তা, জীবনের নিরাপত্তা কে দিবে। ওরা এখন আমাদের বাড়ি-ঘর ভাংচুরের হুমকি দিচ্ছে।
পাঁপড়ী আক্তার নামের এক দোকানী বলেন, আমরা দিন আনি দিন খাই। মুন্সিপাড়ার কয়েকটা চাঁদাবাজ, গুন্ডা, সন্ত্রাস, নেশাখোর ওরা এসে দিন ২৫০ টাকা করে চাঁদা দাবি করেছে। চাঁদা না দেয়ায় ওরা দোকন পাটগুলো ভাংচুর করল। লুটপাট করল। প্রশাসন যদি থাকতো। তাহলে এখই এদের বিচার হইতো। আমরা স্বৈরাচার বিদায় করছি। কিন্তু স্বৈরাচারের বীজ এখনো বিদায় করতে পারি নাই। আমার বিচার চাই। প্রশাসন যদি ওদের গ্রেফতার না করে। তাহলে আমরা এখানে যত পরিবার আছি। সবেই একসাথে সবার গায়ে আগুন দিয়ে মারা যাবো। তারপর প্রশাসনকে দেখাবো মানুষ ক্ষিপ্ত হইলে কি করতে পারে।’
খবর পেয়ে সেখানে ছুটে যায় পুলিশ। বিক্ষোভকারীরা রাস্তা ছেড়ে না দিলে সেখানে আসে সেনাবাহিনী। তারা এসে বিক্ষোভকারীদের গ্রেফতার এবং তাদের দোকান করা ও নিরাপত্তার প্রতিশ্রুতি দিলে তারা অবরোধ তুলে নেয়। কয়েকজন দোকানিকে পুলিশে থানায় ডেকে নেয় মামলা করার জন্য।এ ব্যাপারে রংপুর মহানগর পুলিশের কোতায়ালী থানার ওসি (তদন্ত) শুকুর আলী জানান, রাত সাড়ে ১০টার দিকে তাদেরকে সেনাবাহিনীর সহায়তায় বিক্ষোভ থেকে সরাতে পেরেছি। ঘটনার সাথে জড়িতদের ব্যাপারে আমাদের কাছে বুধবার বিকেল পর্যন্ত কেউ অভিযোগ করেনি।