অনলাইন ডেস্ক.
“এই চিকেন স্নেক অবরুদ্ধ করতে ভারতের সময় লাগবে পাঁচ মিনিট। বাংলাদেশকে আমেরিকা বানাবেন!! নাচুন আপনারা ১৮ কোটি মানুষকে পথে বসাবে মোহাম্মদ ইউনুস” – টিভিতে বা সোশ্যাল মিডিয়ায় (ছবির) ময়ূখের এমন কথা আর অঙ্গভঙ্গি দেখে মনে করা হতে পারে সার্কাসে কেউ তার পারফরমেন্স করছেন, দর্শকদের হাসিতে মাতাতে অঙ্গভঙ্গি দেখে কমেডিয়ান মনে করা অযৌক্তিক হবে না। কিন্তু না তিনি কোন কমেডিয়ান নন তিনি হলেন ভারতীয় টিভি রিপাবলিক বাংলার সিনিয়র এডিটর ময়ূখ রঞ্জন ঘোষ।
উদ্ভট অঙ্গভঙ্গি ও ভুয়া তথ্যে অনবরত বাংলাদেশ সঙ্গে অপসাংবাদিকতা করে যাচ্ছেন তিনি। তার এই অপতথ্যে বিভ্রান্তি ছড়িয়ে পড়ছে সাধারণ মানুষের মধ্যে। তার এই উন্মাদনার ফলে বাংলাদেশে বেশ সমালোচিত হয়েছেন তিনি।
তবে এবার নিজ দেশের কৃষকরাই তার বিরুদ্ধে করছে আন্দোলন। সংবাদ মাধ্যমের তথ্যমতে দীর্ঘদিন ধরেই নানা কারণে আত্মহত্যার পথ বেছে নিচ্ছেন ভারতীয় কৃষকরা। এর মধ্যে অন্যতম হলো অনাবাদ ও ঋণের বোঝা এবং পণ্যের যথামূল্য না পাওয়া। জানা গেছে ২০২৩ এর জানুয়ারি থেকে অক্টোবর পর্যন্ত ১০ মাসে ভারতের মহারাষ্ট্রে ২৩৬৬ জন কৃষক আত্মহত্যা করেছেন। এমন আত্মহত্যার ঘটনা অন্যান্য রাজ্যেও ঘটছে অহরহ।
সম্প্রতি ২ ডিসেম্বর হিলি বন্দর দিয়ে আলু রপ্তানি বন্ধ করল পশ্চিমবঙ্গ সরকার। রাজ্যে অভ্যন্তরীণ সংকটে দাম বৃদ্ধির কারণ দেখিয়ে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে তারা। বাংলাদেশে পণ্য রপ্তানি বন্ধে এবার রাস্তায় আলো ফেলে প্রতিবাদ করছে ভারতীয় কৃষক ও সাধারণ মানুষ।
ভারতীয়রা মনে করছেন ময়ূখের উন্মাদনার কারণেই বাংলাদেশের বাজার হাতছাড়া হয়েছে ভারতীয় কৃষকদের। এসব কৃষকরা আলু ও পেঁয়াজ বাংলাদেশে রপ্তানি করতে না পেরে এক প্রকার হতাশ। তাই দেশটি জুড়ে কৃষকরা এসবের প্রতিবাদ জানাচ্ছেন। ভারতের পশ্চিমবঙ্গ এবং মহারাষ্ট্রসহ বিভিন্ন প্রদেশের কৃষকরা তাদের উৎপাদিত পণ্যের ন্যাজ্যমূল্য না পাওয়ার কারণে ক্ষোভ প্রকাশ করছেন। সেখানকার কৃষকদের দাবি রপ্তানি বন্ধ হওয়ার কারণে তাদের উৎপাদিত পণ্য আড়াই থেকে তিন টাকা দরে তাদের বিক্রি করতে হচ্ছে। এদিকে অল্প দামে এসব পচনশীল পণ্য বিক্রি করতে বাধ্য হওয়ায় উৎপাদন খরচও তুলতে পারছেন না ভারতীয় কৃষকরা।
সংবাদ মাধ্যমের তথ্যমতে রিপাবলিক বাংলার ময়ূখ রঞ্জনের বাড়ির সামনে আলুর বস্তা ফেলে প্রতিবাদ করেছেন কৃষকরা। সে সময় সাংবাদিকদের একজন কৃষক জানান-বাংলাদেশে আমদানি বন্ধ করায় এই আলু তাদের দুই তিন টাকা করে বিক্রি করতে হচ্ছে, ফলে এগুলো তাদের রাস্তায় ফেলে দেওয়া ছাড়া আর কোন উপায় নেই। আর এসব কিছুর জন্য রিপাবলিক বাংলার ময়ূখ ও বিজেপি নেতা শুভেন্দু অধিকারীকে দায়ী করছেন কৃষকরা।
এদিকে ভারতের কৃষকরা ময়ূখ রঞ্জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ করছেন ময়ূখ রঞ্জন মিথ্যা সংবাদের মাধ্যমে বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতের বাণিজ্যিক সম্পর্ক নষ্ট করছে। আমদানি বন্ধ হওয়ায় তাদের এখন ভিক্ষা করার মত অবস্থা।
জানা গেছে, এবার সেই ময়ূখরঞ্জনের বাড়ি ঘেরাও করেছেন বিক্ষুব্ধ কৃষক ও জনতা। এসময় তাদের স্লোগান দিতে দেখা যায় মিথ্যা সংবাদ বন্ধ করো, কৃষকদের রুটি রুজির জবাব দাও।
তবে অভ্যন্তরীণ উৎপাদন ও বিকল্প হিসেবে পাকিস্তান ও চীন থেকে আলু ও পেঁয়াজ আমদানির কারণে বাংলাদেশের বাজার স্থিতিশীল থাকবে বলে আশা করা হচ্ছে। চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রথম প্রান্তিক জুলাই সেপ্টেম্বরে পাকিস্তান থেকে দেশে পণ্য আমদানি বেড়েছে ২৭ শতাংশের বেশি। একই সময়ে ভারত থেকে পণ্য আমদানি কমেছে প্রায় সাড়ে নয় শতাংশ।
বিশ্লেষকরা বলছেন পরিবর্তিত রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে পাকিস্তানের সঙ্গে কূটনৈতিক ও বাণিজ্যিক সম্পর্ক জোরদার হচ্ছে বাংলাদেশের। একই সঙ্গে সম্পর্কে কিছুটা শীতল ভাব দেখা যাচ্ছে প্রতিবেশী দেশ ভারতের সঙ্গে।