অনলাইন ডেস্ক.
কোন যুবতী নারীর এক রাতের মধ্যে বৃদ্ধা নারীতে রূপান্তরিত হওয়ার ঘটনা হয়তো কোন রূপকথার গল্পে শুনেছেন!! নয়তো, কোন সিনেমায় দেখেছেন। কিন্তু যদি শোনেন বাস্তবেই এমনটা ঘটেছে তাহলে কি বিশ্বাস করতে পারবেন??এবার এমনই এক অবিশ্বাস্য ঘটনার তথ্য পাওয়া গেল ভিয়েতনামে।
থি ফুয়ং এর বয়স মাত্র 26 বছর। বাড়ি ভিয়েতনামের বেন্ত্রী প্রদেশের গিয়ংক্রম জেলায়। মেয়েটি দিব্য সুখে সংসার করছিলেন। কিন্তু একদিন হঠাৎ তার সাজানো জীবনটা বদলে গেল। তার স্বামী ঘরে এনেছিলেন এক অজানা সামুদ্রিক মাছ। খুব আগ্রহ নিয়েই সামুদ্রিক খাবার রান্না করেছিলেন থিফুয়ং। এ সেই সুস্বাদু খাবার খেয়ে তিনিসহ পরিবারের সবাই বেশ তৃপ্ত ছিল। কিন্তু পরে অন্যদের কিছু না হলেও থিফুয়ং এর শরীরে এলার্জি শুরু হয় সারা দেহে। চুলকানির কারণে রাতে ঘুমাতে পারলেন না তিনি। পরের দিন ঘুম থেকে উঠেই ডাক্তারের কাছে গেলে এলার্জি ওষুধ দেয়া হয় তাকে। কিন্তু তাতে ঘটে আরো বড় বিপত্তি, ওষুধ খাওয়ার পরদিন নিজেকে আর চিনতে পারেননি তিনি। এমনকি স্বামী থানো তুয়েনও চিনতে পারলেন না নিজের স্ত্রীকে। তার স্বামী ভাবলেন এত সকালে বাড়িতে এই বুড়ি কোত্থেকে এলো! তাও আবার তারই বিছানায় শুয়ে আছে। তাই চমকে উঠলেন থানো কিন্তু যখন সেই বুড়ি কথা বলে উঠলেন তখন তার কন্ঠ শুনে থানো এর মনে হলো এই কণ্ঠ তো ঠিক তার স্ত্রীর মতো। প্রথমদিকে ব্যাপারটাকে ভৌতিক কান্ড বলে মনে হচ্ছিল থানোয়ের কাছে। কিন্তু পরবর্তীতে সব বুঝতে পেরে অবাক হন তিনি।
তিনি বুঝতে পারছিলেন না তার যুবতী স্ত্রীর শরীরের চামড়া বয়স্ক বুড়ির মত হয়ে গেল কিভাবে!! তাও আবার এক রাতের মধ্যে!! এরপর তিনি স্ত্রীকে নিয়ে অনেক চিকিৎসকের কাছে যান। বহু চিকিৎসকের পরামর্শে ওষুধও ব্যবহার করেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত কোন সমাধান মেলেনি। সবশেষে আরোগ্য লাভের আশায় চীনা বিশেষজ্ঞের দ্বারস্ত হন তারা। বিশেষজ্ঞরা জানালেন মাছে বিষ ছিল এবং সেটারই পার্শ্ব প্রতিক্রিয়াতে এমন অবস্থা হয়েছে সেই সুন্দরী নারীর। অনেক পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর তারা যে ওষুধ দিলেন তার অনেক দাম। স্বল্প আয়ে সংসার চালানোই কঠিন, সেখানে এত দামি ওষুধ খাবেন কি করে। এরপরও সহায় সম্বল সব বিক্রি করে স্বামী থানো সেই সুন্দর স্ত্রীকে ফিরে পাওয়ার আশায় দামি ওষুধ কিনে খাওয়ালেন। কিন্তু কয়েক মাস পার হলেও থীর যখন আগের অবস্থা ফিরে এলো না। তখন বাধ্য হয়েই স্বামী তার স্ত্রীর বর্তমান অবস্থাকেই মেনে নিলেন।
তবে এত দুঃখের মধ্যেও থি ফুয়ং এর একটাই সান্ত্বনা তার স্বামী তাকে ছেড়ে যাননি বরং এখন আরো বেশি সময় দেন তাকে। স্ত্রীর চিকিৎসা ও সহযোগিতার জন্য নিজের চাকরিটাও ছেড়ে দেন তিনি।
ভিয়েতনামের এক সংবাদ মাধ্যমকে দেয়া সাক্ষাৎকারে থানোহ বলেন, তার স্ত্রীর বর্তমান রূপ নিয়ে এখন আর কোন আফসোস নেই তার স্ত্রী জীবিত আছেন এবং তারই আছেন সেটাই তার কাছে অনেক বড় বিষয়।