জনপ্রিয়

রংপুরে বৃষ্টির জন্য নামাজ আদায়, আল্লাহর রহমত ও স্বস্তির বৃষ্টির আকুতি

প্রকাশক: Dainik Jagroto Matrivumi
প্রকাশ: 8 months ago

রিয়াজুল হক সাগর, রংপুরঃ তীব্র দাবদাহে পুড়ছে সারা দেশ। অসহনীয় এই তাপপ্রবাহে অতিষ্ঠ জনজীবন। এমন অবস্থায় রংপুরে বৃষ্টির জন্য দুই রাকাত ইসতিসকার নামাজ আদায় করেছেন মুসল্লিরা। তীব্র গরম আর তাপপ্রবাহের সঙ্গে ঘন ঘন লোডশেডিংয়ে হাঁপিয়ে ওঠা মানুষজন এ সময় আল্লাহর রহমত ও স্বস্তির বৃষ্টির আকুতি জানিয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন।বৃহস্পতিবার (২৫এপ্রিল) সকাল ১০টার দিকে রংপুর নগরীর জুম্মাপাড়ায় আলহেরা ইনস্টিটিউট স্কুল মাঠে এ নামাজ আদায় করা হয়। একই দিন সকাল সাড়ে ১০টায় জেলার কাউনিয়া কেন্দ্রীয় ঈদগাহে এবং বেলা ১১টায় বদরগঞ্জ সরকারি কলেজ মাঠে খোলা আকাশের নিচে ইসতিসকার নামাজ আদায় করেন মুসল্লিরা। পরে নামাজ শেষে বৃষ্টির জন্য বিশেষ মোনাজাত করা হয়।নামাজে অংশ নেওয়া মুসল্লিরা জানান, দীর্ঘদিন ধরে রংপুরসহ সারা দেশে বৃষ্টি নেই। তীব্র দাবদাহে জনজীবন অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে। আল্লাহ যেন বৃষ্টির মাধ্যমে এ অবস্থা থেকে সবাইকে পরিত্রাণ করেন, নামাজ শেষে এই প্রার্থনা করা হয়। সবার অশ্রুসিক্ত প্রার্থনায় ছিল একপশলা বৃষ্টি আর শীতল প্রকৃতির আকুতি।এদিকে বৈশাখের ১১ দিন পার হলে এখনো দেখা নেই ঝড়-বৃষ্টির। নেই কালো মেঘের ডাকাডাকি। প্রখর রোদ আর গরমে বর্ষণের গর্জন শূন্য মেঘ। প্রকৃতির বিরূপ আচরণ আর বৈশাখের দাবদাহে ত্রাহি অবস্থা। প্রায় দুই সপ্তাহ ধরে মৃদু দাবদাহে পুড়ছে রংপুর অঞ্চল। অসহনীয় এই গরম আর তাপপ্রবাহে মানুষের পাশাপাশি সবচেয়ে বেশি ছটফট করছে পশুপাখি ও জীবজন্তু। কড়া তাপদাহে ফসলি জমি শুকিয়ে গেছে। ব্যাহত হচ্ছে বিভিন্ন ফসলের চাষাবাদ।এ পরিস্থিতিতে খরা ও অনাবৃষ্টি থেকে রক্ষা পেতে সকালে ইসতিসকার নামাজ আদায় করেছেন ধর্মপ্রাণ মুসল্লিরা। নামাজ শেষে অব্যাহত অনাবৃষ্টি থেকে মুক্তির জন্য ও আল্লাহর রহমত কামনা করে মোনাজাত করা হয়। এ সময় দুই হাত তুলে আল্লাহর দরবারে বৃষ্টির জন্য হু হু করে কাঁদতে থাকেন নামাজে অংশ নেওয়া সাধারণ মানুষজন।নামাজে অংশগ্রহণ করা মুসল্লি ইয়াসির আরাফাত বলেন, এবারের তীব্র দাবদাহে জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। কয়েক দিন ধরে বাড়ি থেকে বের হতে পারছি না। আজকে এই নামাজ পড়তে মাঠে এসেছি। আমরা সৃষ্টিকর্তার কাছে শান্তি ও স্বস্তির বৃষ্টির জন্য প্রার্থনা করেছি। কৃষকের ফসল নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। শিশু ও বয়স্করা অসুস্থ হয়ে পড়েছে। আল্লাহ আমাদেরকে বৃষ্টির মাধ্যমে স্বাভাবিক জীবনে ফেরাবেন ইনশাআল্লাহ।কাউনিয়ায় নামাজ ও দোয়া পরিচালনা করেন আল-আকসা আইডিয়াল মাদরাসার পরিচালক মাওলানা মো. শফিউল আজম। নামাজ আদায় শেষে তিনি বলেন, আল্লাহর কাছে আমরা আমাদের পাপের জন্য ক্ষমা চেয়েছি। তার কাছেই আমরা অনাবৃষ্টি থেকে মুক্তি চেয়েছি। নিশ্চয়ই আল্লাহ ছাড়া কোনো মাবুদ নেই এবং তিনিই চাইলে এই অসহনীয় গরম ও তাপপ্রবাহ থেকে আমরা স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে পারব।এদিকে আবহাওয়া অফিস সূত্রে জানা গেছে, এই সময়টাতে স্বাভাবিক তাপমাত্রা ৩২ থেকে ৩৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস থাকে। তবে গেল দুই সপ্তাহ ধরে রংপুর বিভাগে রেকর্ড করা হয়েছে ৩৫ থেকে ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত। মৌসুমের এ সময়টাতে স্বাভাবিকের থেকে একটু বেশি তাপমাত্রা বাড়লেও তা দুই থেকে তিন দিনের বেশি স্থায়ী হওয়ার কথা নয়। তবে এবার এর ব্যতিক্রম ঘটেছে।রংপুর আবহাওয়া অফিসের ইনচার্জ মোস্তাফিজুর রহমান জানান, আজ বৃহস্পতিবার বিকেল ৩টা পর্যন্ত রংপুর বিভাগের মধ্যে নীলফামারীর সৈয়দপুরে সর্বোচ্চ ৪০ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। একই সময়ে দিনাজপুরে ৪০ ডিগ্রি, রংপুর ও কুড়িগ্রামের রাজারহাটে ৩৮ দশমিক ৪, গাইবান্ধা, লালমনিরহাট ও ঠাকুরগাঁওয়ে ৩৮ ডিগ্রি, নীলফামারীর ডিমলায় ৩৭ দশমিক ২ এবং পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ায় ৩৬ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়।

  • আল্লাহর রহমত ও স্বস্তির বৃষ্টির আকুতিরংপুরে বৃষ্টির জন্য নামাজ আদায়