সংবাদদাতা : দেলোয়ার হোসাইন মাহদী (ব্রাহ্মণবাড়িয়া) প্রতিনিধি
শনিবার (১১ জানুয়ারি) সকালে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার তিতাস নদীর পূর্বপাড় কাশিনগর এলাকায় নদী সম্মিলন-২০২৫ আয়োজিত হয়েছে।
এতে শ’দুয়েক নদীপ্রেমীর উপস্থিতি ছিলেন। উপস্থিত সকলেই নদীকে কিভাবে দূষণ থেকে রক্ষা করা যায়, কিভাবে ফিরবে নদীর নাব্যতা, কিভাবে দখলমুক্ত হবে নদী- এসমস্ত বিষয়ে আলোচনা করেছেন। সাথে সাথে নদীর দুরবস্থার কথা ভেবে নদীপ্রেমীদের নীরব কান্নাও ছিলো।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন, জাতীয় নদী রক্ষা কমিশনের সাবেক চেয়ারম্যান ড. মনজুর আহমেদ চৌধুরী। তিনি তার আলোচনায় নদী বিষয়ে ভারতকে বাংলাদেশের অবিশ্বস্ত বন্ধু হিসেবে উল্লেখ করেন। এ সময় তিনি বলেন, ‘পানির ব্যাপারে বাংলাদেশকে সেলফসাফিশিয়ান হতে হবে। বর্ষাকালে পানি ধরে রাখতে হবে। ভারতের ওপর ভরসা করে থাকা যাবে না।
তিতাস নদীর পূর্ব পার কাশিনগর এলাকায় “তরী” নামক সংগঠনের আহ্বায়ক শামীম আহমেদের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন সাংবাদিক ও লেখক আমিন আল রশীদ, বাংলাদেশ রিভার ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ মনির হোসেন, বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের অ্যাডভোকেট এ কিউ এম সোহেল রানা। জেলার সুধীজনসহ সাংবাদিকরা দিনভর এ আয়োজনে উপস্থিত ছিলেন।
এ সময় ড. মনজুর আহমেদ চৌধুরী জানান, ব্রহ্মপুত্রের পানি ভারত তার পশ্চিমাঞ্চলে ট্রান্সফার করতে চায়, যেটি বাংলাদেশের জন্য সমূহ বিপদ। ভারত থেকে যেসব নদীর শাখা বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে তাদের মধ্যে ব্যাপক পরিমাণ পানি বঙ্গোপসাগরে জমে। বর্ষাকালে এক লাখ ৪০ হাজার কিউবিট মিটার পানি এসব নদী দিয়ে বহমান হয়। তবে সেসব নদী থেকে গ্রীষ্মকালে শতকরা ৫% পানি বাংলাদেশে আসে। আর এগুলোকে ভারত জিও পলিটিক্সের অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করে থাকে।
তিনি আরও জানান, বাংলাদেশ-ভারত নদী সীমান্তে ভারতে কমপক্ষে ৫০ টি ড্যাম অথবা বেড়িবাঁধ রয়েছে। এর মাধ্যমে বাংলাদেশের পানি যখন বেশি দরকার তখন কম দেয়, যখন কম দরকার তখন বেশি পানি দিয়ে জটিলতা সৃষ্টি করে। সিলেট এবং ফেনীর বন্যা সেগুলোর চাক্ষুষ প্রমাণ।
এ সময় নদী রক্ষায় একযোগে কাজ করার ব্যাপারে সবাই অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন।
“তরী”র আহবায়ক শামীম আহমেদ জানান, নদী রক্ষায় তারা কাজ করে যাচ্ছেন। এরই ধারাবাহিকতায় সম্মিলনের আয়োজন করা হয়। সম্মিলন থেকে নদী রক্ষায় বেশ কিছু প্রস্তাবনা উঠে এসেছে, যা বাস্তবায়নে কাজ করা হবে।