জনপ্রিয়

নিবিড় হত্যার বিচার চেয়ে মানববন্ধন

প্রকাশক: Dainik Jagroto Matrivumi
প্রকাশ: 6 months ago

মোঃ হাবিব, ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি

ঠাকুরগাঁয়ের আলোচিত স্কুল ছাত্র নিবিড় (১২) হত্যার বিচার চেয়ে রাস্তায় দাঁড়িয়ে কাঁদতে কাঁদতে বিচারের দাবিতে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছেন নিহত নিবিড়ের মা-বাবা ও এলাকাবাসীরা। শুক্রবার (২৮ জুন) বেলা ১১ টায় ঠাকুরগাঁও সরকারি কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র (টিটিসি) এর সামনে ছেলে হত্যার বিচার চেয়ে এ মানববন্ধন করেছে নিহত নিবিড়ের মা-বাবা ও এলাকাবাসী।মানববন্ধনে এলাকাবাসী ও শতাধিক নারী পুরুষসহ শিশুরাও অংশ নেন। ঘন্টা ব্যাপী এ মানববন্ধনে নিহত নিবিড়ের মা শিল্পী খাতুন বাবা ওমান প্রবাসী আব্দুস সালাম বাবলু ও পৌরসভার সংরক্ষিত ১-৩ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর জেলা যুব মহিলা লীগের সভাপতি নাজিরা আক্তার স্বপ্না সহ বেশ কয়েকজন বক্তব্য দেন।নিবিরের বাবা বলেন, আমার ছেলেকে বলৎকার করা হয়েছে। এসিড নিক্ষেপ করে দুই চোখ ও হাত ভেঙে দেওয়া হয়েছে। সাজ্জাত ও মাহিম যে এই হত্যার সঙ্গে জড়িত তাঁর সকল প্রমাণাদি পুলিশের কাছে আছে। পুলিশ মাহিমকে ধরলেও সাজ্জাতকে ধরছে না। কারণ সাজ্জাত শহরের সিয়াম ফ্যাশন এর মালিকের ছেলে। তাঁরা প্রভাবশালী। এমন একটা অবস্থায় দাড়িয়েছে পুলিশ সাজ্জাতকে জিজ্ঞাসা পর্যন্ত করতে পারছে না। এই হত্যা ঘটনায় পুলিশের ভূমিকা খুবই নীরব। মাহিমকে জেলে আটকে রেখে পুলিশ একটা সাজানো নাটক তৈরি করে বলছে মার্বেল খেলেকে কেন্দ্র করে এই হত্যাকাণ্ড। আসলে নিবির কোনোদিন মার্বেল খেলতো না। তিনি আরও বলেন, আমি ওমানে থাকায় পুলিশ প্রশাসন আমার পরিবারকে যে নির্যাতন করে তা বলা অসম্ভব। যেদিন ছেলের মরদেহ উদ্ধার হয়, সে রাতে আমার স্ত্রী ও বড় ছেলেকে থানায় আটকে রাখে পুলিশ। তাঁরা আমার স্ত্রীকে পরকীয়ার বদনাম দিচ্ছে। পুলিশের মুখে এমন একথা শুনে আমার স্ত্রী আত্মহত্যা করতে গেছিল। আমি থানায় গেলে থানার তদন্ত অফিসার জিয়ারুল ইসলাম আমার সঙ্গেও খারাপ আচরণ ও অশ্লীল ভাষায় কথাবার্তা বলেন। পুলিশ আমার আত্নীয়-স্বজনদের বলে বেড়াচ্ছে এটা পরকীয়া মামলা। আদালতের লোকজনও বলছে, পুলিশ বলছে আপনার স্ত্রী নাকি পরকীয়া করে। আর তদন্ত অফিসার জিয়ারুল ইসলাম আমাকে বলছে, আপনার স্ত্রী পরকীয়া করে কিনা সেটা খেয়াল করেন। এসময় তিনি প্রধানমন্ত্রীর কাছে ছেলে হত্যার বিচার চেয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন তিনিমানববন্ধনে নিহত নিবিরের মা বলেন, সাজ্জাত আমার ছেলেকে হত্যা করে প্রকশ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছে। মাহিম ও সাজ্জাত আমার ছেলেকে কু-প্রস্তাব দিছিল। এতে সে রাজী না হওয়ায় তাকে ঘরে আটকে রেখে হত্যা করেছে। পুলিশ সব জেনেও কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছে না। এসময় তিনি প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করে ছেলের হত্যাকারীদের দ্রুত গ্রেপ্তার ও ফাঁসির দাবি করেন। এর আগে, গত (১৭ মে) এক সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে ঠাকুরগাঁও পুলিশ সুপার উত্তম প্রসাদ পাঠক জানান , নিবির হত্যার সঙ্গে জড়িত এক কিশোর মাহিমকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে । এবং হত্যার সঙ্গে জড়িত কিশোর মাহিম শিকার করেছে যে মার্বেল খেলাকে কেন্দ্র করেই নিবিরকে হত্যা করে মাহিম। পুলিশের সার্বিক তদন্তে উঠে আসে এ হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে আর কেউ জড়িত নয় বলে জানান পুলিশ সুপার। তবে সেদেনই পুলিশ সুপারের এমন বক্তব্যের প্রতিবাদ জানিয়ে নিহতের বাবা ওমান প্রবাসী আব্দুস সালাম বাবলু জানান, ছেলে নিবির কখনই মার্বেল খেলতো না। সে ফুটবল খেলতো। আর ছেলেকে হত্যার পর বস্তাবন্দি করে বাড়ির পাশে একাই ফেলে যাবে যা সন্দিহান। এ হত্যাকাণ্ডের সাথে আরও কেউ জড়িত রয়েছে। সঠিক তদন্তের দাবিও করেন তিনি। এব্যাপারে আজ ঠাকুরগাঁও পুলিশ সুপার উত্তম প্রসাদ পাঠক জানান, পুলিশ ঘটনাটি গুরুত্বের সঙ্গে তদন্ত করছে। ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে ইতোমধ্যে আসামিদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে। আর কেউ জড়িত থাকলে তদন্ত সাপেক্ষে তাদের গ্রেপ্তার করা হবে। উল্লেখ্য যে, দোকান থেকে খরচ আনার কথা বলে (১৮ এপ্রিল) দুপুরের পর বাড়ি থেকে বেডরিয়ে যায় নিবির (১২)। পরবর্তীতে নিখোঁজের দুদিন পর (২০ এপ্রিল) ভোরে বাড়ির পাশে একটি পরিত্যক্ত গলিতে নিবিরের অর্ধগলিত লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।

  • নিবিড় হত্যার বিচার চেয়ে মানববন্ধন