কলামিস্ট: অথই নূরুল আমিন (কবি কলামিস্ট ও রাষ্ট্র বিজ্ঞানী), মোহাম্মদপুর, ঢাকা।
ছাত্র রাজনীতি শুধু ছাত্রলীগ করেছে, তা কিন্তু নয়, ছাত্র রাজনীতি সব দলেরই শাখা হিসাবে আছে। যদিও ছাত্রলীগ জন্ম হওয়ার ইতিহাস ভিন্ন। আজকে আমি তা লিখব না।
আমাদের সমাজে বেশ কিছু রাজনৈতিক দলের ছাত্র নীতি শাখা বা অঙ্গ সংগঠন রয়েছে। যদিও ছাত্রলীগ আওয়ামী লীগের সাথেই পরগাছা বনের গাছের মতো ঘেসাঘেসি করে চলেছে। তবে ছাত্রলীগ কখনও আওয়ামী লীগের অঙ্গ সংগঠন নয়।
অথচ বিএনপির অঙ্গ সংগঠন ছাত্রদল, জামায়াতের অঙ্গ সংগঠন ছাত্র শিবির, এরকম জাতীয় ছাত্র দল, বাম ঘরানার দল গুলোর ও বেশকিছু ছাত্র ইউনিয়ন বা ইউনিট রয়েছে। বিশেষ করে খুব গভীরে যদি আলোচনা করা হয়। তাহলে দেখা যায়, দেশের যে, রাজনৈতিক দল গুলোর ছাত্র সংগঠন রয়েছে। সেই মুল দলগুলো যে দেশপ্রেমিক নয়। দেশের জনগণের প্রতি তাদের যে, ভালোবাসা নেই। এই ছাত্র সংগঠন গুলো তৈরি করা তার একটি বড় প্রমাণ।
কোমলমতি ছাত্র ছাত্রী দিয়ে কেন, তাদের জন্য একটি রাজনৈতিক ছাত্র অঙ্গ সংগঠন শাখা রাখা হলো? যে বয়সে ছাত্র ছাত্রীরা শিক্ষা নিয়ে প্রতিষ্টিত হওয়ার জন্য কলেজ বা বিশ্ববিদ্যালয়ে নিয়মিত দৌড়ঝাঁপ করবে। সেই বয়সে রাজনৈতিক দল গুলো তাদের স্বার্থ হাসিলের জন্য। তাদের দলের ক্ষমতার জানান দেয়ার জন্য, ছাত্রদের ব্যবহার করা হচ্ছে যুগের পর যুগ । যার ফলে লাখ লাখ ছাত্র ছাত্রীদের বড় হবার স্বপ্ন গুলো অকালেই ঝরে যাচ্ছে প্রতিনিয়ত। এরকম একটি মর্মান্তিক বিষয় নিয়ে যারা ভাবছে না। তারা যে দেশের মঙ্গল কামনা মোটেই ভাবে না। তা নিশ্চিত করে বলা যায়।
এরকম একটি বিষয় আমাদের দেশের বড় রাজনৈতিক দল গুলোর মধ্যে কেউ কখনও ভাবেনি যেহেতু। তাহলে নিঃসন্দেহে বলা যায়। ওরা কেউ জাতির কল্যাণে কিছু করার ভাবনাই ভাবেনি কখনও। “শিক্ষা জাতির মেরুদণ্ড”।” আজকের শিশু আগামী দিনের ভবিষ্যৎ”। তাহলে এই শ্লোগান গুলো দেশের রাজনৈতিক নেতারা কি জানেন না?
বাল্যকাল থেকে ছেলে মেয়েরা, কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ে গিয়ে রাজনীতি দল আর রাজনীতি পদবী আর প্রতিপক্ষকে মোকাবেলা করতে যদি হানাহানি তর্কাতর্কিতে সারাক্ষণ জড়িত থাকে, তাহলে ওরা জাতির ভবিষ্যত হবে কি করে?
সেদিন ছাত্রলীগ নিষিদ্ধ ঘোষণা করে প্রজ্ঞাপন জারি করা হলো। এখানে ছাত্রলীগ দোষী প্রমাণিত বলা হয়েছে বলা হলো । যদি সত্যি দোষী প্রমাণিত হয়ে থাকে। এর দায় আওয়ামী লীগ এড়াতে পারে না। আবার যেদিন ছাত্রদল বা ছাত্র শিবির দোষী প্রমাণিত হবে আদালতে। তার দায় ও বিএনপি বা জামায়াত এড়াতে পারবে না।
আমার প্রশ্ন হলো দেশের কোন্ ছাত্র সংগঠনটা পবিত্র? উত্তর হবে, না। এখানে কমবেশি সবাই দোষী। ছাত্র রাজনীতি যারা করছে। তারা যে কোনো রাজনৈতিক দলের অঙ্গ সংগঠন হোক না কেন, তারা সবাই কোনো না কোনো ভাবে খারাপ কাজেই লিপ্ত বেশি। তার উদাহরণ হলো। রাজনৈতিক ভাবে ছাত্র রাজনীতির সাথে যারা জড়িত আছে। এখানে কোনো রাজনৈতিক দলেই কিন্তু তাদের ছাত্র নেতাদের কে বেতন ভাতা দেয় না। বরং দলের নাম ভাঙ্গিয়ে চুরি ছিনতাই চাদাবাজী মাদক বিক্রি থেকে শুরু করে নারী ব্যবসা পযর্ন্ত ওরা কমবেশি সবাই করছে।
আমার কথা হলো সকল রাজনৈতিক দলের অঙ্গ সংগঠন “ছাত্র রাজনীতি” চিরতরে বন্ধ ঘোষণা করা উচিত। যদি আমরা আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে, সুন্দর সমাজ, সুশৃংখল পরিবেশ উপহার দিতে চাই । তবে ছাত্র ছাত্রীদের মাঝে অরাজনৈতিক সংগঠন বা সমিতি সোসাইটি থাকতে পারে।
আর যদি ছাত্ররা নিজেরা রাজনীতি করতে চায়। শিখতে চায়। তাহলে কলেজ বা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাহিরে তারা কেন্দ্রীয় কমিটি, জেলা বা উপজেলা কমিটি সৃষ্টি করতে পারে। সবচেয়ে বড় সমস্যা হলো কলেজ বা বিশ্ববিদ্যালয় মুখী, যখন তারা কলেজের ভিতরে শাখা কমিটি করে। অথবা অমুক হল কমিটি করে। তখনই ওরা নিজেদের মধ্যে সবসময় বিবাদ লেগে থাকে এবং প্রতিপক্ষের সাথে অসভ্য পশুদের চেয়েও খারাপ আচরণ করতে থাকে। তখনই এখানে খুন খারাপি হয়। যার ফলে শিক্ষার পরিবেশ নষ্ট হয়। ছাত্রদের নেতা বা নেত্রী ওরা অনেক সময় কলেজ বা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃক পক্ষের সাথে এমনকি ভিসি অধ্যক্ষের সাথে পযর্ন্ত বেয়াদবি করতে দেখা যায়।
বন্ধ হোক সকল ছাত্র রাজনীতি। বন্ধ হোক কিশোর গ্যাং অপসংস্কৃতি। ঘরে ঘরে হোক সু শিক্ষিত সন্তান।