মোঃ শাকিল আহমেদ, চৌহালী প্রতিনিধি
আহসান হাবিব বলেন সিরাজগঞ্জ থেকে দ্রুতযান এক্সপ্রেস ঢাকা যাচ্ছিলাম । হঠাৎ ট্রেনের মধ্যে এক যাত্রী অসুস্থ হয়ে পড়ে। ট্রেনের মধ্যে প্রেশার মাপার মেশিন না থাকায় আম্মু কে ফোন দিয়ে স্টেশনে আসতে বলি একটা রিকশা নিয়ে। ‘স্টেশনে নেমে দেখি, আমার মা প্রেশার মাপার যন্ত্র নিয়ে এসেছেন। আমরা দ্রুত রোগীকে কুমুদিনী ওমেনস মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করি। হাসপাতালে নেওয়ার পর পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে দেখি, রোগীর হাইট্রপোনিনআই; অর্থাৎ তিনি তখন হার্ট অ্যাটাক করেছিলেন।’ ডা. আহসান হাবিব উজিরের সঙ্গে আজ দুপুরে মুঠোফোনে কথা হয়। তখন তিনি রোগীর অবস্থা জানতে তাঁর সঙ্গে হাসপাতালেই ছিলেন। আহসান হাবিব জানান, রোগীকে ট্রেনের মধ্যে যতটুকু সম্ভব প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে ট্রেনের পরিচালককে ট্রেনটি মির্জাপুর স্টেশনে (অনির্ধারিত বিরতি) থামাতে বলেন। হঠাৎ ট্রেনের মাইকে ঘোষণা দেওয়া হচ্ছিল, গ বগিতে একজন যাত্রী গুরুতর অসুস্থ, ট্রেনে কোনো চিকিৎসক থেকে থাকলে তিনি যাতে সহায়তা করেন। ট্রেনটির ড বগির ১০৫ নম্বর আসনের যাত্রী ছিলেন চিকিৎসক আহসান হাবিব। ঘোষণা শুনে তিনি গ বগিতে গেলেন। রোগী প্রায় অচেতন অবস্থায় আছেন। আহসান হাবিব ট্রেনের পরিচালকের কাছে ডায়াবেটিস বা প্রেশার মাপার যন্ত্র চান। ট্রেনে তা ছিল না। প্রাথমিক জরুরি ওষুধের বাক্স পর্যন্ত নেই। এদিকে রোগীর শরীর ঠান্ডা হয়ে যাচ্ছে। হৃদ্যন্ত্রের সমস্যার রোগীকে বাঁচাতে অতি জরুরি সিপিআর (কার্ডিও পালমোনারি রিসাসিটেশন) দেওয়ার মানসিক প্রস্তুতি নেওয়ার সময় এই চিকিৎসককে একজন যাত্রী তাঁর কাছে থাকা জীবন বাঁচানোর কিছু ওষুধ দিয়ে সহায়তা করেন। চিকিৎসক আহসান হাবিব উজিরের জন্ম টাঙ্গাইলের মির্জাপুরে। ২০১৮ সালে তিনি রাজশাহী মেডিকেল কলেজ থেকে এমবিবিএস পাস করেন। পদ্মা সেতু রেলসংযোগ প্রকল্পে মেডিকেল অফিসার হিসেবে দুই বছর কাজ করেছেন। ২০২২ সালের ৪ ডিসেম্বর ৪০তম বিসিএসে স্বাস্থ্য ক্যাডারে সিরাজগঞ্জে চৌহালী উপজেলা স্বাস্থ্যকেন্দ্রে যোগ দেন। বর্তমানে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে (এমএস অপথালমোলজির ফেজ-এ রেসিডেন্ট) প্রেষণে আছেন।