জনপ্রিয়

চলনবিলে সোনালী স্বপ্ন ঘরে তুলতে ব্যস্ত কৃষকরা

প্রকাশক: Dainik Jagroto Matrivumi JM TV
প্রকাশ: 7 hours ago

সিংড়া (নাটোর) প্রতিনিধি

শস্যভান্ডার খ্যাত চলনবিল অঞ্চলে শুরু হয়েছে চলতি মৌসুমের বোরো ধান কাটা। একইসাথে চলছে মাড়াই। চলনবিলের বিস্তীর্ণ ফসলের মাঠ জুড়ে এখন সোনালী শীষে সমারোহ। হিমেল বাতাস ও মিষ্টি রোদে দোল খাচ্ছে ধানের শীষ।মাঠে মাঠে এখন কৃষকের সবুজ স্বপ্ন ছেয়ে গেছে। সেই সাথে ইরি-বোরো ধানের বাম্পার ফলনে খুশি চলনবিলের কৃষকরা।চলতি মৌসুমে বিস্তীর্ণ মাঠজুড়ে বোরো ধানের দৃশ্য দেখে মনে হবে আবহমান বাংলার চিরায়িত রূপের কথা। দৃষ্টিসীমা ছাপিয়ে বাতাসে দোল খাচ্ছে বোরো ধানের সোনালি শীষ। সেই দোলায় লুকিয়ে রয়েছে চলনবিল অঞ্চলের হাজার হাজার কৃষকের স্বপ্ন।চলনবিল অধ্যুষিত নাটোরের সিংড়া উপজেলায় কৃষকরা প্রচন্ড তাপদাহের মধ্যেই শুরু করেছেন বোরো ধান কাটা। চলতি বছর আবহাওয়া অনুকুলে থাকায় ফলনও ভালো হচ্ছে সেই সাথে ভালো দাম পেয়ে খুশি কৃষক।চলনবিল জুড়ে পুরোদমে চলছে ধান কাটা ও মাড়াইয়ের মহোৎসব। সেই উৎসবকে ঘিরে বসে নেই কৃষক পরিবারের সদস্যরা। বাড়ির বৃদ্ধ, মহিলা থেকে শুরু করে শিশু-কিশোররা পর্যন্ত কাজে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছে।উপজেলা কৃষি বিভাগ জানায়, আশেপাশের জেলা থেকে প্রচুর পরিমান ধান কাটা শ্রমিক সিংড়ার প্রতিটি গ্রামে এসেছে। তাছাড়াও হারভেস্টার মেশিন দিয়েও কৃষক তার জমি থেকে ধান কেটে ঘরে তুলছে। এবার ফলন ভালো ও দাম বেশি পাওয়ায় কৃষকরা খুশি।চলনবিলের ডাহিয়া গ্রামের কৃষক কালাম বলেন, অন্য বছরের তুলনায় এ বছর ধানের ফলন বেশি। কোনো প্রকার ক্ষয়ক্ষতি হয়নি, শুধু বাতাসে ধানগুলো মাটিতে পড়ে যাওয়ায় কিছুটা অসুবিধায় পড়েছিলাম ধান কাটার জন্য শ্রমিক পাচ্ছিলাম না। শ্রমিক পাওয়ার পরে আমরা ভালোভাবে ধান কেটে ঘরে তুলতে পারছি।সাঁতপুকুরিয়া গ্রামের কৃষক বাহার মোল্লা, কাফি ও সিদ্দিক হোসেন বলেন, ধান উৎপাদনে আমরা যে টাকা খরচ করেছি ফলন ভালো হওয়ায় তার চেয়ে বেশি টাকায় ধান বিক্রি করেছি। গত কয়েক বছরের তুলনায় এবার আমরা লাভবান।তাজপুরের শহরবাড়ি গ্রামের কৃষক আমিন আলী বলেন, এ বছর তিনি ৬০ বিঘা জমিতে বিভিন্ন জাতের বোরো ধান আবাদ করেছেন। এখন পর্যন্ত ১৩ বিঘা ধান কর্তন করেছেন। ধানের ফলন এবার অনেক ভালো পাচ্ছেন। দামও অনেক ভালো। কিছুদিন আগে বৃষ্টি হলেও ধানের কোন ক্ষতি হয়নি। ঠিক মতো ধান কাটতে পারলে এবং প্রাকৃতিক দূর্যোগ না হলে এবার মনের স্বপ্নটা পূরণ হবে।পাবনা থেকে চলনবিলে ধান কাটতে আসা শ্রমিক রহিম বলেন, গতবছরের তুলনায় এবার ধান যেমন বেশি তেমনই দামও বেশি হওয়ায় আমরাও লাভবান। যা ধান পাই তা নিয়ে পুরো বছর পরিবার নিয়ে খেতে পারি।ধান ব্যবসায়ী আঃ মতিন মৃধা বলেন, গত বছরের তুলনায় এ বছর শুরুতেই কৃষক তার ধানের সঠিক দাম পাচ্ছে, আমরা মিনিকেট ধান কিনছি ১৫০০ টাকা করে।সিংড়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ খন্দকার ফরিদ জানান, চলতি মৌসুমে সিংড়া উপজেলায় ৩৬ হাজার ৬০০ হেক্টর জমিতে বোরো ধানের চাষ হয়েছে। অন্যান্য বছরের তুলনায় এবার ধানের ফলন ও দাম বেশি। কোনো প্রাকৃতিক দূর্যোগ ও পোকা মাকড়ের প্রভাব পড়েনি। এ বছর দাম ভালো হওয়ায় কৃষক লাভের মুখ দেখবে বলে আশা করছি। এখন ধান কাটার সাথে সিদ্ধ করে চাল তৈরির কাজও চলছে কৃষক পরিবারে।