রিয়াজুল হক সাগর, রংপুর
উজানের পাহাড়ী ঢলে রংপুরের গঙ্গাচড়ায় তিস্তা নদীর পানি বাড়ছে। পানি বিপদসীমার নিচে থাকলেও নদীর তীরবর্তী নিম্নাঞ্চল, চর ও দ্বীপ চরগুলো প্লাবিত হয়েছে। এতে এক হাজার ২’শ পরিবার পানিবন্দী হয়ে পড়েছেন। এদিকে তিস্তার তীব্র স্রোতে নদী এলাকায় ভাঙ্গন দেখা দিয়েছে। বুধবার (৩ জুলাই) ২০টি ঘরবাড়ি নদী ভাঙ্গনের শিকার হয়েছে। জানা যায়, গত ১৫ দিনের বেশি সময় ধরে তিস্তা নদীর পানি বাড়া-কমার মধ্যে রয়েছে। উজানের পাহাড়ী ঢল ও ভারী বর্ষণে প্রতিদিন তিস্তা নদীতে ৫ থেকে ৬ সেন্টিমিটার পানি বাড়ে, আবার কমে যায়। এতে করে নিম্নাঞ্চলের মানুষেরা পানিবন্দী হয়ে পড়েছে। ইতোমধ্যে নদীর র্তীরবর্তী এলাকার ঘরবাড়ি নদী ভাঙ্গনের শিকার হয়েছে। অসংখ্য রাস্তাঘাট, ব্রীজ-কালর্ভাট ক্ষতির মুখে পড়েছে। ডুবে গেছে বাদাম, পাটসহ শাক-সবজির ফসলী জমি। বুধবার তিস্তা নদীর পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় উপজেলার ৭টি ইউনিয়নের প্রায় ১ হাজার ২’শ পরিবার পানিবন্দী হয়ে পড়েছে। নোহালীর চরে ৩টি, মর্ণেয়ার তালপট্টিতে ৯টি বাড়ি, ভাঙ্গাগড়ায় ৩টি এবং কোলকোন্দের চিলাখালে ৪টিসহ নদীর তীরবর্তী চরের ২০টিরও বেশি বাড়ি তিস্তার তীব্র স্রোতের কারণে ভেঙ্গে গিয়েছে।নোহালীর চরের আনোয়ার, আয়নাল, আমিনুর বলেন, নদী পানি বাড়া-কমার মধ্যে থাকলেও বন্যার পানি থ্যাকি যায়। বাড়ির কাছ দিয়া নদীর পানি যাইতোছে আর ভাঙ্গতোছে। এই জন্তে বাড়ি সরায় নেওয়া লাগিল। নদী জমি-জমা কাড়ি নিল, ঘরবাড়িও নিয়া নেইল। এ্যালা হামরা কোটে যায়া থাকমো, কি খামো সেই চিন্তাত আছি। গঙ্গাচড়া উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা সজীবুল করিম বলেন, আমার উপজেলার ৭টি ইউনিয়ন তিস্তা নদী বেষ্টিত। উপজেলায় এক হাজার ২’শ পরিবার বর্তমানে পানিবন্দী রয়েছে। পানিবন্দী মানুষদের ইতোমধ্যে ইউএনও স্যারের মাধ্যমে শুকনা খাবার বিতরণ করা হয়েছে। রংপুর পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা যায়, উজানের পাহাড়ী ঢলে বুধবার বিকেল ৩টায় তিস্তা নদীর কাউনিয়া পয়েন্টে পানি বিপদসীমার ১৯ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে। যদিও এ পয়েন্টে সকাল ৬টায় বিপদসীমার ৩৬ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে পানি প্রবাহিত হয়েছে। দেশের উত্তরাঞ্চল ও এর উজানে আগামী ২৪ ঘন্টায় মাঝারী থেকে ভারী এবং ৪৮ ঘন্টায় ভারী বৃষ্টিপাতের পূর্বাভাস দিয়েছে পানি উন্নয়ন বোর্ড। পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী রবিউল ইসলাম বলেন, আগামী ২৪ ঘন্টায় তিস্তা নদীর পানি স্থিতিশীল অবস্থায় থাকবে। নদী ভাঙ্গন রোধে আমরা কাজ করে যাচ্ছি।