জনপ্রিয়

কুড়িগ্রামে শাকিলের নেতৃত্বে বেপরোয়া কিশোর গ্যাং

প্রকাশক: Dainik Jagroto Matrivumi
প্রকাশ: 8 months ago

আমীনুল ইসলাম স্টাফ রিপোর্টার, কুড়িগ্রামঃ উত্তরের সীমান্তবর্তী জেলা কুড়িগ্রামে হঠাৎ বেড়ে গেছে কিশোর গ্যাংয়ের উৎপাত। ১৫ থেকে ২০ কিশোরের নেতৃত্বে আছে শাকিল মিয়া (২০)। তারা ছিনতাই, যৌন হয়রানি, চাঁদাবাজি, মাদক সেবনসহ নানা অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িত। সন্তানের ভবিষ্যৎ নিয়ে উৎকণ্ঠায় দিন কাটাচ্ছেন অভিভাবকরা। জানা গেছে, কক্সবাজার জেলা শহরের একটি বেসরকারি কলেজের একাদশ শ্রেণির ছাত্র শাকিল মিয়া কুড়িগ্রাম শহরে অবস্থান করে নিজস্ব বাহিনী গড়ে তুলেছে। বাহিনীর সদস্যরা জেলা শহরের ধরলা সেতু বাঁধ ও কাঁঠালবাড়ি বাজার এলাকায় নানা অপরাধে জড়িত। এ ছাড়া স্কুল-কলেজ ছুটির সময় রাস্তার মোড়ে দাঁড়িয়ে তারা ছাত্রীদের যৌন হয়রানি করে। শাকিলের গ্যাংয়ের বেশির ভাগ সদস্য জেলা সদরের কাঁঠালবাড়ি, ত্রিমোহনী ও পুরোনো রেলস্টেশন এলাকার বাসিন্দা। নাম প্রকাশ না করার শর্তে ধরলা বাঁধের স্থানীয় এক বাসিন্দা জানান, দুপুরে যারা বাঁধে ঘুরতে আসেন, শাকিলের গ্রুপের সদস্যরা অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে তাদের মোবাইল ফোন, টাকা ছাড়াও মূল্যবান জিনিসপত্র ছিনিয়ে নেয়। কাঁঠালবাড়ি বাজারের এক ব্যবসায়ী বলেন, ঈদুল ফিতরের আগে সেলামি হিসেবে আমি ১৫ হাজার টাকা দিতে বাধ্য হয়েছি। আমার মতো বেশির ভাগ ব্যবসায়ীকে চাঁদা দিতে হয়েছে। দোকান থেকে পণ্য নিলেও টাকা দেয় না। শাকিলকে চাঁদা না দিয়ে কোনো কাজ করা কঠিন। প্রভাবশালীদের ছত্রছায়ায় সে মাদকসহ নানা অপরাধ করছে। অস্ত্র ব্যবহার করায় ভয়ে কেউ কিছু বলতে সাহস করে না। কুড়িগ্রাম সরকারি মহিলা কলেজের এক শিক্ষার্থী বলেন, কলেজ ছুটি হলেই দেখি স্টেডিয়ামের সামনে, রাস্তার মোড়ে বাইক নিয়ে এক দল কিশোর আপত্তিকর নানা অঙ্গভঙ্গি করে। উচ্চ স্বরে গান ও হাসাহাসি করে। সম্প্রতি কাঁঠালবাড়ি বাজার এলাকায় চাঁদা না দেওয়ায় টিসিবির পণ্য বিক্রিতে বাধা দেয় কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যরা। প্রতিবাদ করায় কাঁঠালবাড়ি ইউনিয়নের আধ গ্রামের বাসিন্দা বীর মুক্তিযোদ্ধা আমির উদ্দিনকে প্রাণনাশের হুমকি দেওয়া হয়। গত ২৬ মার্চ কুড়িগ্রাম সদর থানায় অভিযোগ দিয়েছেন আমির উদ্দিন। তবে পুলিশ এখন পর্যন্ত কাউকে ধরতে পারেনি। আমির উদ্দিন বলেন, ‘দুই ভাই মুক্তিযুদ্ধে গিয়ে একজন শহীদ হয়েছেন। স্বাধীন দেশে আমি ব্যবসা করতে পারছি না, প্রাণে মেরে ফেলার হুমকি দিচ্ছে। অভিযোগ দিলেও পুলিশ অজ্ঞাত কারণে পদক্ষেপ নিচ্ছে না। নিজেকে খুব অসহায় লাগে।’ অভিযোগের বিষয়ে শাকিল মিয়ার মোবাইল নম্বরে একাধিকবার কল দিলেও বন্ধ পাওয়া যায়। তবে তার বাবা আব্দুল মতিন বলেছেন, আমার ছেলের বিরুদ্ধে আনা সব অভিযোগ মিথ্যা। কুড়িগ্রাম সদর থানার ওসি মাছুদুর রহমান জানান, শাকিলের বিরুদ্ধে মৌখিকভাবে দু-একটি অভিযোগ পেয়েছেন তারা। কাঁঠালবাড়িতে চাঁদাবাজির ঘটনায় মামলা হয়েছে। বিষয়টি গুরুত্বসহকারে তদন্ত করা হচ্ছে। জেলা পুলিশের মিডিয়া মুখপাত্র অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রুহুল আমীন জানান, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, ধরলা বাঁধ, কাঁঠালবাড়িসহ শহরের গুরুত্বপূর্ণ স্থানে নিরাপত্তা টহল জোরদার করা হবে

  • কুড়িগ্রামে শাকিলের নেতৃত্বে বেপরোয়া কিশোর গ্যাং