শিমুল হোসাইন
আমরা একটি অসভ্য জাতি গড়ে উঠছি। সমস্ত দিক, সমস্ত কথা বাদই দিলাম শুধু আমাদের বাজার ব্যবস্হাপনার কথাই বলি।
ধরে নিলাম, আমাদের দেশের জনসংখ্যা সর্বমোট ১৮ কোটি। এই আঠারো কোটির মধ্যে, আট কোটি মানুষই ব্যবসায়ী। বাকি দশ কোটি মানুষ সাধারণ ভোক্তা। এখন কথা হচ্ছে ব্যবসায়ী আমাদের দেশে কম, সংখ্যায় বেশি মানুষই ভোক্তা। এতো বড় একটা আমাদের ভোক্তা সমাজ থাকতেও কিভাবে কিছু অসাধু ব্যবসায়িরা সিন্ডিকেট করছে। আমরা কি সংখ্যা লঘুরা এদের বিরুদ্ধে অবস্থান নিতে পারিনা। এদের বিরুদ্ধে কি ব্যবস্থা নেওয়ার কেউই নেই।
আমাদের দেশের যে বানিজ্যিক কার্যক্রম রয়েছে এগুলো কি নিয়ন্ত্রনীত, কিংবা এগুলো কি ত্রুটিপূর্ণ না? এরা কি সরকারের নিয়ন্ত্রণ করার বাইরে? কিভাবে একটা দেশের বানিজ্যিক কার্যক্রম এতোটা মানহীন হতে পারে। আমাদের দেশে বেশিরভাগ সিজনাল ফলের দামই চড়া। যখন বাজারে ফল নামে তখন মূল্য থাকে আকাশছোঁয়া। আর যখন কেউ ক্রয় করে না তখন সেটার মূল্য একদম নিচে নেমে যায়।
এখন কথা হচ্ছে, বাজারে নতুন কোনো ফল নামে তখন যদি সেটা সাধারণ ভোক্তাদের ক্রয় ক্ষমতার মধ্যে থাকতো তাহলে সেটার বাজারচাহিদাও বেশি থাকতো ফলও বেশি বিক্রয় করে লাভবানও বেশি হওয়া যেত। কিন্তু আমাদের দেশের ব্যবসায়ীরা সেটা করবে না। তার কম পন্যে অধিক লাভবান হওয়ার আশা করে। এতে অবশ্য আমাদের সাধারণ ভোক্তারও দোষ কম নয়। আসলে আমাদের তাদেরকে গ্রাহ্য করাটাই দোষের।
সাধারণভাবে তরমুজের কথাই বলা যেতে পারে। এখন যেহেতু তরমুজ বাজারে নতুন নামছে, তাই ব্যবসায়ীরা অধিক লাভের আশায় কেজি দরে বিক্রি করছেন। কিন্তু, যখন চাহিদা কমে যাবে তখন আবার পিস হিসেবে বিক্রি হবে। মানে সোজা হিসাব,বাজার চাহিদায় ৮০০ টাকা আর চাহিদা কমলেই ২০০টাকা। কি, নিয়ম।
এটা মূলত আমাদের প্রতিবাদ না করারই ফসল, যদি আমরা প্রতিবাদ করতে পারি তাহলে ‘ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ’ এর কোনো প্রয়োজনই হবে না। আর যেহেতু আমরা এর প্রতিবাদ করতে পারছিনা তাই আমরা আর সভ্য নই, অসভ্যতে পরিনত হচ্ছি।