জনপ্রিয়

ভারতে চিকিৎসা নিতে গিয়ে ছিনতাইসহ নানা বিড়ম্বনায় বাংলাদেশীরা

প্রকাশক: Dainik Jagroto Matrivumi
প্রকাশ: 10 months ago

নিজস্ব প্রতিবেদক

ভারত থেকে ফিরে: ভারতে চিকিৎসা নিতে গিয়ে নানা বিড়ম্বনায় পড়তে হচ্ছেন বাংলাদেশীদের। ছিনতাইসহ নানা গুরুতর অপরাধের ঘটনা ঘটছে প্রায়শই। চরম হুমকির মুখে শত শত বাংলাদেশীর জীবন। এতে প্রশ্নবিদ্ধ হচ্ছে নিরাপত্তা ব্যবস্থা। সম্প্রতি এসব নিয়ে কথা উঠেছে আইনশৃঙ্খলা কমিটির সভাতেও। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও অভিজ্ঞতা শেয়ার করছেন অনেকে। গত সপ্তাহে বেনাপোল সীমান্ত হয়ে ভারতে যান মোস্তাফিজুর রহমান নামে এক কন্টেন্ট ক্রিয়েটর। এর আগেও ভারতে গেছেন তিনি, তবে আকাশপথে। এবার প্রথমবারের মত স্থলপথে (ট্রেন) ভারত গিয়ে পড়েন জটিলতায়। অভিজ্ঞতা তুলে ধরে তিনি বলেন, স্থলবন্দরের অভিজ্ঞতা আমার প্রথম। ভারতের ভেতরে ঢোকার পর যেখান থেকে অটো নিতে হয় হঠাৎ ৪/৫ ছেলে এসে আমাদের পাসপোর্টটা নেয়, সিলটা দেখতে চায়। এসময় পাসপোর্ট নিয়ে চলে যাচ্ছে। তাদের অফিসে নিয়ে গিয়ে বলছে, এগুলো বেসিক ইনফরমেশন। তারা বলে, আসেন আসেন, চলেন না, শুধু তথ্য দিয়ে চলে যাবেন। মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ওরা টানতে টানতে চলে যাচ্ছে। গেলাম, একটা কাগজে নোট করল, পাসপোর্ট দেখে ডিটেইল নোট করল। ভাল কথা, আমি তখন শুনছি ওরা কী বলে। তখন বলছে, আপনাদের কাছে বাংলা টাকা কত আছে? আমি বললাম, বাংলা টাকা কত আছে তাতে তোমার কী? বাংলা টাকা যাই থাক না কেন, সেটাকে আপনাকে কেন বলতে হবে? তখন ওরা বলে, না বলেন, লিখতে হবে। আমি বললাম, আছে হয়ত এক দেড় হাজার টাকা থাকতে পারে। তখন বলে, এক দেড় হাজার টাকার বেশি থাকলে সিজ করে নেয়া হবে, আপনাদের এখন চেক করা হবে। তখন বললাম, চেক করবা কেন? তুমি চেক করার কে? পাসপোর্ট হাতে নিলা কেন? ধমক-টমক দিলাম, তখন ওরা বলে, ঠিক আছে আপনারা চলে যান। তারপর আমরা চলে আসলাম। সম্প্রতি চিকিৎসা নিতে গিয়ে ছিনতাইকারীর কবলে পড়েন রাজশাহী প্রেসক্লাব ও জননেতা আতাউর রহমান স্মৃতি পরিষদের সভাপতি সাইদুর রহমান। তিনি সাবেক এমএনএ মাদার বখশের নাতি। তার বাবা আতাউর রহমান ছিলেন বঙ্গবন্ধুর বাকশাল সরকারের গভর্নর ও মা মনোয়ারা রহমান ছিলেন বিশিষ্ট ভাষাসৈনিক। ঐতিহ্যবাহী পরিবারের এ সদস্য দীর্ঘদিন থেকে ভারতে ফলোআপ চিকিৎসা নিয়ে আসছেন। স্থলপথেই যাতায়াত করতেন তিনি। দীর্ঘদিনের ভারত যাত্রায় সম্প্রতি প্রথমবারের মত তিক্ত অভিজ্ঞতা হয়েছে তার। বাংলাদেশের বেনাপোল হয়ে ভারতে প্রবেশ করতেই হরিদাশপুরে বেশ কয়েকজন ছিনতাইকারী তাকে ঘিরে ফেলে। সাইডে নিয়ে গিয়ে ছিনিয়ে নেয় কাছে থাকা টাকা। সাইদুর রহমান বলেন, ছিনতাইকারীরা তারা পুলিশের লোক পরিচয় দিয়ে আমাকে নিয়ে যায়। তাদের কাছে চাকুসহ অন্যান্য ধারালো অস্ত্রও ছিল। তবে কৌশলী হয়ে কোনোমতে প্রাণে রক্ষা পাই। এ ঘটনায় সর্বশেষ অনুষ্ঠিত রাজশাহী জেলা আইনশৃঙ্খলা কমিটির সভায় বিষয়টি উত্থাপন করেন তিনি। এসময় কমিটির সভাপতি ও জেলা প্রশাসক শামীম আহমেদ বলেন, বিষয়টি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে জানানো হবে, যাতে বৈধভাবে ভারতে যাওয়ার পর কেউ হয়রানির শিকার না হন। এসব ব্যপারে আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম মেম্বার ও রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন বলেন, নাগরিকদের নিরাপত্তার বিষয়টি নিয়ে উপর মহলে আলোচনা করব। এদিকে, এসব ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে উত্তরবঙ্গের সর্ববৃহৎ অরাজনৈতিক স্বেচ্ছাসেবী সামাজিক সংগঠন জননেতা আতাউর রহমান স্মৃতি পরিষদ। নাগরিকদের নিরাপত্তা প্রদানে দ্রুত কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণের দাবিও জানিয়েছে সংগঠনটি। এছাড়া ভারত গমন করা নাগরিকদের সতর্ক হওয়ার অনুরোধও করা হয়েছে।

  • ভারতে চিকিৎসা নিতে গিয়ে নানা বিড়ম্বনায় বাংলাদেশীরা