মুহাম্মদ এরশাদুল ইসলাম
একদিন পরই বাঙালি জাতিসত্ত্বার গৌরবোজ্জ্বল ও স্মৃতিবিজড়িত একুশে ফেব্রুয়ারির বাহাত্তর বছর পূর্ণ হবে। তবে এবারো নিজের প্রতিষ্ঠানের অঙ্গনে ভাষা শহীদদের শ্রদ্ধা জানাতে পারবে না বরগুনার পাথরঘাটা উপজেলার প্রায় ৮৫ শতাংশ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা। এছাড়া নিজেদের প্রতিষ্ঠানে কোনো শহীদ মিনার না থাকায় আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসে এসব শিক্ষার্থীকে যেতে হবে নিকটবর্তী কোনো শহীদ মিনারে। জানা গেছে, উপজেলায় প্রাথমিক, মাধ্যমিক, উচ্চমাধ্যমিক ও মাদরাসার মোট সংখ্যা ২০৩টি। এর মধ্যে শহীদ মিনার আছে এমন প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা মাত্র ৩২টি। ভাষা দিবসের দিন এলাকার হাজারো শিক্ষার্থী অস্থায়ীভাবে কলাগাছ ও বাঁশ দিয়ে শহীদ মিনার তৈরি করে ভাষা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করে। আবার কিছু প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা ফুল দিতে যায় দূরের কোনো শহীদ মিনারে। কোনো কোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে তা-ও হয় না। যেসব প্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার আছে সেগুলো সারা বছর পড়ে থাকে অযত্ন-অবহেলায়। ফেব্রুয়ারি মাস শুরু হলেই এসব প্রতিষ্ঠানে শুরু হয় অস্থায়ীভাবে শহীদ মিনার নির্মাণের কাজ। পাথরঘাটা উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসের তথ্য অনুসারে, পাথরঘাটায় ১৪৯টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোর মধ্যে ৩টিতে আছে স্থায়ী শহীদ মিনার আর বাকি ১৪৬টিতে নেই কোন শহীদ মিনার। একইভাবে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিস থেকে জানা গেছে, উপজেলার শিক্ষা অফিসের আওতাধীন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান রয়েছে ৫৪টি। ২৯টি স্কুল, ১৮টি মাদরাসা ও ৭টি কলেজ। এসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে স্থায়ী শহীদ মিনার আছে ২৯টি, নেই ২২টি প্রতিষ্ঠানে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক বলেন, অনেক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার নেই। শহীদ মিনার না থাকায় শিক্ষার্থীরা কলাগাছ দিয়ে অস্থায়ী শহীদ মিনার তৈরি করে শহীদের প্রতি শ্রদ্ধা জানায়, এটা খুবই দুঃখজনক। পাথরঘাটা উপজেলা মাধ্যমিক একাডেমিক সুপারভাইজার মনিরুল ইসলাম বলেন, সরকারি বরাদ্দ না থাকার কারণে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার নির্মাণ করা সম্ভব হচ্ছে না, আমি এ বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কতৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলবো। যেসব স্কুলে স্থায়ী শহীদ মিনার নেই, সেসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ২১শে ফেব্রুয়ারির দিন অস্থায়ী শহীদ মিনার তৈরি করে দিবসটি পালন করতে হবে।’’