বদরগঞ্জ (রংপুর) প্রতিনিধি: রংপুরের বদরগঞ্জে চাহিদার বিপরীতে সিকিভাগ বিদ্যুৎও মিলছে না। ফলে তীব্র গরমের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে বিদ্যুতের ভয়াবহ লোডশেডিং। এ কারণে জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। জানা যায়, উপজেলায় মোট বিদ্যুৎ গ্রাহকের সংখ্যা ৮৪ হাজার। চেংমারী ও মিরাপাড়া এ দু’টি বিদ্যুৎ উপকেন্দ্র থেকে ১০টি ফিডারের মাধ্যমে এসব গ্রাহকের মাঝে বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হয়ে থাকে। একেকটি ফিডারে বিদ্যুতের চাহিদা রয়েছে আড়াই থেকে তিন মেগাওয়াট। সে অনুযায়ী ১০টি ফিডারে মোট বিদ্যুতের চাহিদা ২৫-৩০ মেগাওয়াট। অথচ জাতীয় গ্রিড থেকে বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হচ্ছে মাত্র ৫-৭ মেগাওয়াট। যা’ দিয়ে দুটি ফিডারের বেশি সচল রাখা যাচ্ছে না। ফলে ভয়াবহ লোডশেডিংয়ের কবলে পড়েছে উপজেলার সকল মানুষ। আর এর প্রভাব পড়ছে সবক্ষেত্রেই। সরেজমিনে বিভিন্ন এলাকা পরিদর্শনকালে কথা হয় উপজেলার কালুপোড়া ইউনিয়নের খামার মালিক বেলাল হোসেনের সাথে। তিনি বলেন, এমনিতেই নানা রোগে গরু আক্রান্ত হচ্ছে। তার ওপর বিদ্যুতের লোডশেডিং হুমকির মধ্যে ফেলে দিয়েছে। তীব্র গরমে খামারের গরুগুলো ক্রমেই দুর্বল হয়ে পড়েছে। ফলে দুধের উৎপাদন মারাত্মকভাবে কমে গেছে। একই কথা বলেন, বিষ্ণুপুর ইউনিয়নের দক্ষিণ বিষ্ণুপুর ইউনিয়নের খামার মালিক আরমান আলী ও রামনাথপুর ইউনিয়নের কিসমত ঘাটাবিল এলাকার আব্দুল মতিন। ভ্যানচালক গোলাপ হোসেন বলেন, বিদ্যুৎ না থাকায় ঠিকমতো ব্যাটারিতে চার্জ দিতে না পারছি না। এ কারণে দু’দিন ধরে বাড়ি থেকে ভ্যান বের করতেই পারছি না। রেস্টুরেন্ট শ্রমিক ময়নুল হক বলেন, সারাদিন পরিশ্রম করে রাতে বাড়িতে ফিরলে বিদ্যুৎ না থাকায় ঘুম আর হয় না। পরদিন দোকানে এসে ঘুম ঘুম চোখে সঠিকভাবে কাজ করাও সম্ভব হয় না। রেস্টুরেন্ট মালিক হরেন চন্দ্র রায় বলেন, তীব্র গরমের কারণে এমনিতেই লোকজন ঘর থেকে খুব একটা বের হচ্ছেন না। শহুরে মানুষজন দোকানে বসলেও বিদ্যুৎ না থাকার কারণে বেশিক্ষণ থাকতে চান না। এ কারণে প্রতিদিনই ব্যবসায় লোকসান গুণতে হচ্ছে। কুতুবপুর ইউনিয়নের নাটারাম এলাকার গৃহিনী আমেনা বেগম বলেন, ঘরে একটি ছোট বাচ্চা রয়েছে। যতক্ষণ বিদ্যুৎ থাকে ততক্ষণ সে বেশ ভালোই থাকে। যখনই বিদ্যুৎ চলে যায় তখনই সে গরমে কান্নাকাটি শুরু করে। তাই বাধ্য হয়ে একটি চার্জার ফ্যান কিনে এনেছি। কিন্তু যেভাবে বিদ্যুৎ পাচ্ছি তাতে চার্জ দেয়াও সম্ভব হচ্ছে না। এ বিষয়ে জানতে চাইলে স্থানীয় পল্লী বিদ্যুৎ অফিসের ডিজিএম ফখরুল আলম বলেন, উপজেলায় রাতের বেলা মোট বিদ্যুতের চাহিদা ১৮ মেগাওয়াট আমরা পেয়েছি ৮ মেগাওয়াট , দিনের বেলা চাহিদা ১৩ মেগাওয়াট পেয়েছিলাম ৫-৬ মেগাওয়াট। তবে গতকাল থেকে সাইদা অনুযায়ী বিদ্যুৎ পাওয়া যাচ্ছে বলে জানিয়েছেন।