মুহাম্মদ এরশাদুল ইসলাম
বরগুনার পাথরঘাটায় উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে দু’পক্ষের মারামারিতে প্রার্থীসহ ৩০ জন আহত হয়েছে। এদের মধ্যে ১০ জনকে পাথরঘাটা হাসপাতালে নিলে ৪ জনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বরিশাল শেরে বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। এরা প্রত্যেকেই ছাত্রলীগ ও যুবলীগ নেতাকর্মী। বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে উপজেলা নির্বাচনে চেয়ারম্যান প্রার্থী মোস্তফা গোলাম কবির কাপ-পিরিচ মার্কা ও এনামুল হোসাইনের দোয়াত-কলম মার্কার সমার্থকদের মধ্যে কাকচিড়া ইউনিয়নের কাটাখালী ও পাথরঘাটা হাসপাতালে দফায় দফায় এই সংঘর্ষ সংগঠিত হয়। পাথরঘাটা থানার ওসি আল মামুন ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেন। আহতরা হলেন, দোয়াত-কলম মার্কার প্রার্থী এনামুল হোসাইন, যুবলীগ নেতা ফয়সাল আহম্মেদ, মো. সোলাইমান, শাহ আলী, সবুজ গাজী, তানভীর আহম্মেদ, ছাত্রলীগ নেতা মো. আহাদ, মো. রাকিব ও রুবেল মিয়া, হাসান রাব্বি। প্রার্থী এনামুল হোসাইন অভিযোগ করে বলেন, নির্বাচনের শুরু থেকেই কাকচিড়া ইউনিয়নের ইউপি চেয়ারম্যান আলাউদ্দিন পল্টুর ছেলে রাজন আহম্মেদ কাপ-পিরিচ মার্কার পক্ষ নিয়ে আমার (এনামুলের) লোকজনকে ভয়ভীতি প্রদর্শন করছে এবং আমার প্রচার অফিস ভাঙচুর করেছে। আজ আবার মোটরসাইকেলে মহরা দিয়ে রাজন ও তার লোকজন নিয়ে আমার কাকচিড়া ইউনিয়নের নির্বাচনী প্রচার অফিস চালায়। তিনি বলেন, খবর পেয়ে আমি (এনামুল হোসাইন) কিছু কর্মী নিয়ে সেখানে গেলে আমার ওপর হামলা করে এবং আমাকে কুপিয়ে শরীরের বিভিন্ন জায়গায় জখম করে। পরে পুলিশ গিয়ে উদ্ধার করে আমাকে পাথরঘাটা হাসপাতালে ভর্তি করে। আরেক চেয়ারম্যান প্রার্থী মোস্তফা গোলাম কবির জানান, বিকেলে কাকচিড়া ইউনিয়নের কাটাখালী গ্রামে তার এবং এনামুলের সমর্থকদের মধ্যে কথা কাটাকাটির সময় একটু হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। বিষয়টি তাৎক্ষণিক স্থানীয়রা মিট করে দেয়। তারপরেও এনামুল সন্ধ্যার পর তার লোকজন নিয়ে ওই এলাকায় আমার লোকজনকে মারধর করেছে। তাদের মধ্যে শাহআলী ও রাকিবকে পাথরঘাটা হাসপাতালে ভর্তি করালে সেখানে আমার লোকজন দেখতে যায়। এসময় এনামুলের সমর্থকরা আমাদের ওপর সশস্ত্র হামলা চালায়। এতে উভয় পক্ষের প্রায় ৩০ জন ছাত্রলীগ ও যুবলীগ নেতাকর্মী আহত হয়। তিনি বলেন, আমার গণ জোয়ার দেখে এনামুল নির্বাচন বানচাল করার জন্য এসব কাজ করছে। পাথরঘাটা হাসপাতালের পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা মাসুদ রানা জানান, প্রার্থী এনামুল ভর্তি হওয়ার পর মোস্তফা গোলাম কবিরের দুজন সমর্থককেও হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এ সময় আহতদের দেখতে উভয় পক্ষের লোক পাথরঘাটা হাসপাতালে জড়ো হয়। পরে এক পর্যায়ে এটি নিয়ে হাসপাতালের মধ্যেই সংঘর্ষ বাধে। ৩০ মিনিট ধরে সংঘর্ষ চলার পর পুলিশ এসে উভয় পক্ষের ওপর লাঠিচার্জ করে সবাইকে ছত্রভঙ্গ করে দেয়। পাথরঘাটা থানার ওসি আল মামুন জানান, এই ঘটনায় যাতে নির্বাচনের ওপর প্রভাব না পরে সে কারণে এই মারামারির সঙ্গে যারা জড়িত তাদের আটকের ব্যাপারে চেষ্টা চলছে। প্রার্থীরা অভিযোগ দিলে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে এই উপজেলায় ২৯ মে ভোট হওয়ার কথা ছিল। ঘূর্ণিঝড় রিমালের কারণে তা স্থগিত করা হয়। পরবর্তীতে নির্বাচন কমিশন আগামী ৯ জুন ভোট গ্রহণের দিন ধার্য করেছে বলে পরিপত্রে জানানো হয়।