অনলাইন ডেস্ক.
বিয়ের চার মাসের মাথায় জন্ম নেয় সন্তান, অথচ কাবিন নামায় নিজেকে কুমারী দাবি করে ভালোবেসে রাসেলকে বিয়ে করেছিলেন বর্ষা। একে একে পাওয়া যায় তার আরো দুই স্বামীর পরিচয়। তিনি আট মাসে ভালোবেসে বিয়ে করেছিলেন তিনজনকে। কিন্তু কারো সাথেই ডিভোর্স হয়নি তার অভিযোগ আছে ২১ বছর বয়সে বর্ষা বিয়ে করেছেন পাঁচটি। এমনকি নিজেকে সবসময় কুমারী রাখতে প্রতিটি বিয়েতেই ব্যবহার করেছেন খালতো বোনের জন্মসনদ।
বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে ৫ আগস্ট সকালে রাজধানীর যাত্রাবাড়িতে নিহত হন মোহাম্মদ রাসেল। পরে তার মায়ের হাতে পাঁচ লাখ টাকার অনুদানের চেক তুলে দেয় জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশন। রাসেলের স্ত্রী বর্ষা আক্তার অনুদানের টাকার ভাগ চাইলে একাধিক স্বামী থাকায় রাজি হয়নি রাসেলের পরিবার। এরপরই বেরিয়ে আসে তার প্রতারণার সব কৌশল। রাসেলের মা মমৃত জানিয়ে বর্ষা জামায়েত ইসলামের কাছ থেকে দুই লাখ টাকা নিয়েছে বলে অভিযোগ করেছে রাসেলের পরিবার। সমন্বয়ক সার্জিস আলমের কাছ থেকেও নিয়েছে নগদ অনুদান। রাসেলের বাবা-মা নাই ভাই-বোনকে কেউ নাই, রাসেল এতিম ওর একটা সন্তান রাইখা গেছে, এই কথা বলে সে জামায়েতে ইসলামের যে অফিস হেড অফিস থেকে কান্নাকাটি করে দুই লাখ টাকা নিয়েছে বলে অভিযোগ এলাকাবাসীর।
২০২২ সালে ওয়াহিদ নামে এক তরুণ বর্ষাকে বিয়ে করেন। কিছুদিন পর বর্ষার একাধিক বিয়ের কথা জানতে পেরে লোকলজ্জা ও ভালোবাসায় বিষয়টি মেনে নেন তিনি। কিন্তু দেড় মাস পর মায়ের বাড়ি গিয়ে ওয়াহিদের কাছে আর ফেরেননি বর্ষা। ডিভোর্সও দেননি তিনি। দুই বছর পর সবশেষ স্বামী রাসেল মারা গেলে অনুদান পাওয়ার প্রয়োজনে ডিভোর্স চেয়ে ওয়াহিদকে কল করেন তিনি।
আন্দোলনে শহীদ রাসেলের ভাবীর অভিযোগ বিয়ের সময় নাম পরিচয় গোপন রেখে প্রতারণা করেন বর্ষা। তিনি বলেন, ওর নাম হইছে বর্ষা ওই ময়না নামের এক মেয়ের মানে জন্ম নিবন্ধন দিয়া ও সব জায়গায় কাবিন করে ওর ছোট বোন যে ওর ছোট বোনেরও বিয়ে হইছে এই একই নাম দিয়া ওদের এটা একটা চক্র।
বর্ষার তিন বিয়ের কাবিননামা অনুসন্ধান করে দেখা যায় কুমারী দাবি করতে ব্যবহার করতেন খালাতো বোনের জন্মসনদ। রাসেলকে বিয়ে করেন গর্ভে সন্তান নিয়ে। এ বিয়ের চার মাসের মাথায় জন্ম নেয় সন্তান।
পাঁচ স্বামীর কথা অস্বীকার করলেও, ডিভোর্স ছাড়াই তিন স্বামী রাখার কথা স্বীকার করেন বর্ষা।
বর্ষার একাধিক বিয়ে বেআইনি বলছেন আইনজীবী। আইনজীবী জানান, আইন অনুযায়ী এটা কখনোই সে প্রথম বিয়ে বলবৎ থাকাকালীন অবস্থায় দ্বিতীয় বিয়ে করতে পারে না। এটা নিঃসন্দেহে প্রতারণার আশ্রয় গ্রহণ করেছে। সেজন্য তার বিরুদ্ধে প্রতারণার মামলা হতে পারে এবং এটা দেশীয় আইন অনুযায়ী স্পষ্ট বলা আছে।
একাধিক স্বামী থাকার তথ্যে বিপাকে পড়েছেন বর্ষা নিজেই। পঞ্চম স্বামী শহীদ রাসেলের অনুদানের টাকার ভাগ পাওয়া নিয়েও সৃষ্টি হয়েছে জটিলতা। বিষয়টি সমাধানে জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশন কর্তৃপক্ষকেও বসতে হচ্ছে বর্ষা এবং রাসেলের পরিবারের সঙ্গে।