জনপ্রিয়

হেলিকপ্টার রেস্টুরেন্ট এখন বেতাগীর বিনোদনাস্থল

প্রকাশক: Dainik Jagroto Matrivumi
প্রকাশ: 10 months ago

মুহাম্মদ এরশাদুল ইসলাম

বরগুনার বেতাগী পৌর শহরের পুরাতন ম্যাজিস্ট্রেট আদালত ভবন এলাকায় মাঠের মধ্যে গতকাল শুক্রবার (২৩ ফ্রেরুয়ারি) সকাল থেকে দাঁড়িয়ে আছে একটি হেলিকপ্টার। গতকাল বিকেল থেকে রেস্টুরেন্টের খাবার পরিবেশনা শুরু হয়েছে। এটি দেখতে দূর-দূরান্ত থেকে ভিড় করছেন বিনোদন প্রেমীরা। কেউ ঘুরে দেখছেন হেলিকপ্টারটি, কেউবা তুলছেন ছবি। ভেতরে ঢুকতেই অবাক হবেন যেকেউ। কারণ এটি আকাশচারী কোনো যান নয়, হেলিকপ্টারের আদলে তৈরি ভ্রাম্যমাণ রেস্টুরেন্ট। এটি এখন বেতাগীর শিশু কিশোরদের একমাত্র বিনোদন কেন্দ্রে পরিনত হয়েছে। সরেজমিনে পরিদর্শনে এই প্রযক্তির ব্যবহারে জানা গেছে, ব্যতিক্রম এই হেলিকপ্টার রেস্টুরেন্টের প্রথম যাত্রা শুরু হয়েছে গত ১৬ ডিসেম্বর পটুয়াখালীর ঝাউতলায়। যা গ্রাহকদের চাহিদা অনুযায়ী সড়কপথে বিভিন্ন জেলা ও উপজেলায় নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। পটুয়াখালী সদর ও মির্জাগঞ্জ ঘুরে রেস্টুরেন্টটি বর্তমানে পৌঁছেছে দেশের উপকূলীয় জনপদ বরগুনার বেতাগী উপজেলায়। খবর ছড়িয়ে পড়তেই এক নজর দেখার জন্য দূর-দূরান্ত থেকে নারী-পুরুষ ও শিশু-কিশোরা ছুটে আসতে শুরু করেছেন।’ এটি দেখতে আসা সপ্তম শ্রেণির শিক্ষার্থী অর্ক মন্ডল জানায়, ‘ এটি দেখতে হেলিকপ্টারের মত। এজন্য আমাদের সহপাঠীরা বন্ধরা মিলে ঘুরে দেখতে এলাম।’ দর্শক রিয়াজ মাহমুদ বলেন,’ হেলিকপ্টার রেস্টুরেন্ট সব মহলে প্রশংসিত হয়েছে। শিশু কিশোর থেকে শুরু বয়স্করাও এটা দেখতে আসে। এর ফলে আমরা বিনোদন পেলাম।’ ভ্রাম্যমাণ হেলিকপ্টার রেস্টুরেন্টের নির্মাতা পটুয়াখালী সদর উপজেলার ছোট বিঘাই ইউনিয়নের কাজীর হাট বাজারে ওয়ার্কশপ মিস্ত্রি মো. মেহেদী হাসান বলেন, শুরুর দিকে এ কার্যক্রম নিয়ে স্থানীয়রা হাস্যরস করলেও পরে প্রশাংসা পেয়েছেন। অভাবের সংসারে মেহেদীর লেখাপড়া করা সম্ভব হয়নি। সংসারে ঘানি টানতে একটি ওয়ার্কশপে কাজ শুরু করেন এবং তখন থেকেই ভিন্ন কিছু করার চিন্তা করেন তিনি। একপর্যায়ে বানিয়ে ফেলেন এ হেলিকপ্টারটি। মেহেদী হাসান বলেন, ‘বানাতে চেয়েছিলাম প্লেন। কিন্তু এতে খরচ বেশি হওয়ায় হেলিকপ্টার বানাই। অর্থ অভাবের কারণে আরিফুল ইসলাম ও আল-আমিনসহ আমরা তিন বন্ধু মিলে নির্মাণকাজ সম্পন্ন করি। হেলিকপ্টারের ভেতরে রেস্টুরেন্ট বানিয়ে সারা বাংলাদেশ ঘোরার পরিকল্পনা করি এবং সে লক্ষ্যেই এটি তৈরি করেছি।’ হেলিকপ্টার রেস্টুরেন্টের তিন বন্ধুই এর মালিক। এই মালিক পক্ষের তিন বন্ধুর আরেক বন্ধু আরিফুর ইসলাম বলেন, ‘হেলিকপ্টার রেস্টুরেন্ট’ তৈরিতে প্রায় সাত মাস সময় লেগেছে। এতে প্রায় ২০ লাখ টাকা ব্যয় হয়েছে। এ রেস্টুরেন্ট নিয়ে ৬৪ জেলায় ঘুরতে চাই আমরা তিন বন্ধু। হেলিকপ্টারের আদলে এটি তৈরি হওয়ায় এর নামকরণ করা হয়েছে ‘ভ্রাম্যমাণ হেলিকপ্টার রেস্টুরেন্ট’। এবিষয় বসুন্ধরা শুভসংঘের বেতাগী উপজেলা সভাপতি আলহাজ্ব কামাল হোসেন খান বলেন,’ এটা শিশু কিশোরদের বিনোদনের অন্যতম মাধ্যম। তবে মালিক পক্ষকে বিশেষভাবে অনুরোধ জানাবো যাতে শিশু কিশোরদের স্বাস্থ্য সম্মত খাবার পরিবেশন করে এবং সকল শ্রেণির মানুষের ক্রয় ক্ষমতার মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকে।’

  • হেলিকপ্টার রেস্টুরেন্ট এখন বেতাগীর বিনোদনাস্থল