রায়পুরা (নরসিংদী) প্রতিনিধি--সাদ্দাম উদ্দিন রাজ: নরসিংদীর রায়পুরায় একটি সালিশ বৈঠক চলাকালে দুই পক্ষের সংঘর্ষে উভয় পক্ষের ৪০ জন আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। গুরুতর আহত পান্থ হাজারী (২৬) নামের এক যুবককে উদ্ধার করে ঢাকা পাঠানো হয়েছে। বৃহস্পতিবার (৪ এপ্রিল) উপজেলার মির্জাপুর ইউনিয়নের মাহমুদাবাদ নামাপাড়া এলাকার হাজারী বাড়ি ও নয়াগাজী বাড়ির বিএনপি নেতা শফিক আহমেদের অনুসারীদের মধ্যে এ সংঘর্ষ হয়। জানা গেছে, সকাল ১১টা থেকে বিকেল ৫ পর্যন্ত ছয় ঘন্টা চলা সংঘর্ষে উভয় পক্ষের লোকজন আহত, ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ ও লুটের ঘটনা ঘটে। পরে খবর পেয়ে রায়পুরা ও বেলাব থানার পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। বর্তমানে এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছে। অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। স্থানীয় সূত্র জানায়, পুরাতন ব্রহ্মপুত্র নদের ওপর নির্মিত একটি ব্রিজের নিজের অংশে থাকা মৌচাক থেকে মধু সংগ্রহ নিয়ে বেলাল উপজেলার ইব্রাহীমপুর ও রায়পুরা উপজেলার মাহমুদাবাদ এলাকার যুবকদের মধ্যে বিরোধ তৈরী হয়। এরই জেরে উভয় এলাকার যুবকরা প্রতিপক্ষের এলাকায় গিয়ে লাঞ্ছিত হন। গত মঙ্গলবার (২ এপ্রিল) ইব্রাহীমপুরের এক যুবক মাহমুদাবাদ এসে মোটরসাইকসহ স্থানীয় শফিক আহমেদ অনুসারীদের হাতে আটক হয়। আটক হওয়া ওই যুবক সর্ম্পকে মাহমুদাবাদ এলাকার দিল মিয়া হাজারীর মেয়ের ভাসুর। পরে খবর পেয়ে দিল মিয়া হাজারী ও মিলন হাজারী গিয়ে তাদের আত্মীয় ওই যুবককে ছাড়িয়ে আনেন। এরই জেরে হাজারী বাড়ির লোকজনের সঙ্গে নয়াগাজীর বাড়ির শফিক আহমেদ লোকজনের ঝগড়া হয়। পরে দুই পক্ষের বিরোধ মীমাংসার জন্য আজ বৃহস্পতিবার মির্জাপুর ইউপি চেয়ারম্যানের উপস্থিতিতে সালিশ বৈঠক হয়। বৈঠক চলাকালে উভয় পক্ষ উত্তেজিত হয়ে বল্লম, লাঠি নিয়ে সংঘর্ষে জড়ায়। এক পর্যায়ে হাজারী বাড়ির পক্ষ নিয়ে সংঘর্ষে জড়ান ইব্রাহীমপুরের লোকজন। হামলায় উভয় পক্ষের ৪০ জন আহত, ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ ও লুটের ঘটনা ঘটেছে। এদিকে রায়পুরা ও বেলাব উপজেলার দুটি গ্রামের লোকজনের মধ্যে ছড়িয়ে পড়া সংঘর্ষ বন্ধে পুলিশ ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা সর্বাত্মক চেষ্টা চালাই। পরে বিকেল পাঁচটার পর উভয় পক্ষ বাড়ি ফিরে যান। মোশারফ হাজারী বলেন, বিএনপি নেতা শফিক আহমেদের নেতৃত্বে তার লোকজন দেশীয় অস্ত্র দিয়ে হামলা চালাই। এতে আমাদের ২০ জন আহত হয়েছে। এঁদের মধ্যে গুরুতর আহত পান্থ হাজারীর অবস্থা আশঙ্কাজনক। তাকে ঢাকায় একটি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। আহত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি আছেন বলে মুঠোফোনে জানান শফিক আহমেদ। তিনি বলেন, হাজারী বাড়ির লোকজন হামলা চালালে আমার লোকজনও পাল্টা জবাব দেয়। এ সময় তাদের হামলায় আমিসহ ১৫জন আহত হই। মির্জাপুর ইউপি মেম্বার রিপন মিয়া বলেন, তুচ্ছ ঘটনা নিয়ে সালিশে বসে দুই পক্ষ সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। হামলায় আমার স্ত্রীও আহত হয়েছে। বর্তমানে সে ঢাকায় ভর্তি আছে। বিকেলে উপজেলা মাহমুদাবাদ এলাকা পরিদর্শনে আসেন নরসিংদী অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) অনির্বাণ চৌধুরী, সহকারী পুলিশ সুপার (রায়পুরা সার্কেল) আফসান আল আলম, রায়পুরা থানার ওসি সাফায়েত হোসেন পলাশ। সহকারী পুলিশ সুপার (রায়পুরা সার্কেল) আফসান আল আলম বলেন, তদন্ত সাপেক্ষে জড়িতদের বিরুদ্ধে আইগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। বর্তমানে এলাকা শান্ত আছে। পরবর্তী সহিংসতা এড়াতে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে বলে জানান তিনি।