রাবি প্রতিনিধি
শহীদ বুদ্ধিজিবি চত্বরের পাস দিয়ে হাঁটার সময় হটাৎ চোখ যায় একটি পাখির দিকে। তারপর কাছে গিয়ে দেখি এতো একটি পাখি নয়, পাখির মেলা। এ দৃশ্য দেখে প্রতিটি দর্শক পাখির সাথে যেন কথা বলতে শুরু করে। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের(রাবি) শহীদ বুদ্ধিজীবী চত্তরে প্রাণিবিদ্যা বিভাগ ও ভ্যালেন্ট টেক লিমিটেড এর সহযোগিতায় বিশ্ববিদ্যালয়ের বার্ড কনজারভেশন ক্লাব একদিন ব্যাপি এই পাখি মেলার আয়োজন করেছে। সোমবার(২৬শে ফেব্রুয়ারি) সকাল ৯ টায় ‘পাখি প্রকৃতির সৌন্দর্য, আনন্দের সংগী-এদের বাচতে দিন’ প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে উক্ত মেলা শুরু হয়। এরপর পাখি সংরক্ষণে গণসচেতনতা সৃষ্টির লক্ষ্যে একটি র্যালি বের করা হয়। র্যালিটি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান সড়কগুলো প্রদক্ষিণ শেষে মেলা প্রাঙ্গণে এসে শেষ হয়। পাখি মেলার মূল আকর্ষণ ছিল স্কুলের বাচ্চাদের চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা। ক্যাম্পাসের আশেপাশের বিভিন্ন স্কুলের নার্সারি থেকে পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থীরা এই প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করে। লম্বা সাদা কাগজে তারা ফুটিয়ে তুলে টিয়া, মাছরাঙা, বক, শালিক, ময়নাসহ বিভিন্ন পাখির ছবি। প্রায় অর্ধশত শিক্ষার্থী প্রতিযোগিতায় অংশ নেয়। আয়োজনের সহকারী পরিচালক হাসনাত রনি বলেন,এ আয়োজনের উদ্দেশ্য হলো পাখির প্রতি মানুষের ভালোবাসার এবং সচেতনতা তৈরি করা। বাংলাদেশে একটা ছোট দেশ হওয়ায় জমির পরিমাণ কম, তাই পাখির সংখ্যা প্রতিনিয়তই কমছে। আমরা দেখি বর্তমান ছেলে-মেয়েরা কাক আর শালিকের পার্থক্য বুঝতে পারে না। এটা আমাদের ব্যর্থতা এই ব্যর্থতার দায় এড়ানোর জন্যই আমরা এ আয়োজন করছি। দর্শনার্থী তৌফিকুল ইসলাম বলেন, এটা নিসন্দেহে ভালো একটা উদ্যোগ। পাখি প্রকৃতির একটা অংশ আর প্রকৃতিকে সচল রাখার জন্য পাখির সাথে পরিচিত হওয়ার আমাদের জরুরি। আমার পাখি ভালো লাগে আমি অনেক বৈচিত্র্যময় পাখি দেখলাম মনে হলো এগুলো জীবন্ত পাখি। জেনেটিক ইন্জিনিয়ারিং এন্ড বায়ো টেকনোলজি বিভাগের ২০-২১ সেশনের ছাত্র হাসিবুল শান্ত বলেন, বর্তমানে বাসস্থানের অভাবে পাখি বিলুপ্ত হয়ে যাচ্ছে। এর আয়োজনের মূল উদ্দেশ্য হলো সচেতনতার জন্য। মানুষকে পাখি সম্পর্কে জানানো এবং পাখিকে রক্ষা করার সাথে সাথে প্রকৃতিকে রক্ষা করা। সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, স্টলে পাখির ছবির মধ্যে রয়েছে- কালোপিঠ গাংচিল, বাদামী ঝিল্লি, পালাসির গাংচিল, সাইবেরিয় শিলাফিদ্দা, লম্বাপা তিলাবাজ, নীল চটক, উইলসন্স স্টর্ম পেট্রল, লালঘাড় কাস্তেচোরা, তিলা লালবাটান, উল্টেঠুঁটি, ছোট বাবুবাটান, খুড়ুলে পেঁচা, কালোমাথা কাস্তেচোরা, ধলাকোমর মুনিয়া, ইউরেশিয় চামচ ঠুঁটি, বুটপা ঈগল, রঙিলা চ্যাগা, খয়রা মাথার সুঁইচোরা, সাদাগলা মানিকজোড়, সবুজ চাপাখি, তিলা লাল পা, ছোট ডুবুরী, ডাহুক, নদী টি টি, বামুন শালিক, জল ময়ূর, উদয়ী গয়ারসহ আরো বিভিন্ন রকমের পাখি। পাশের স্টলে রয়েছে পাখির প্রদর্শনী। সেখানে সারিবদ্ধভাবে সাজানো রয়েছে- পানকৌড়ি, জল কাক, তুর্কি বাজ, টিয়া, লক্ষ্মী পেঁচা, হুতুম পেঁচা, গরিয়াল মাছরাঙা, পাতি তিলি হাঁস, ডোরা কাঠবিড়ালি, কোয়েল, পাঁতি কাক, নিশি বক, বালি হাঁস, চোখাচোখি, সাতভাই প্রভৃতি। এইসব পাখিগুলো রাসায়নিক দিয়ে সংরক্ষণ করা।
তারিফুল ইসলাম, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়