তারিফুল ইসলাম, রাবি:
জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের আদলে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) চার দিনব্যাপী ৭ম ছায়া জাতিসংঘ সম্মেলন শুরু হয়েছে। 'প্রযুক্তিগত উন্নয়ন এবং স্থায়িত্ব অর্জন: একটি সমৃদ্ধ বাস্তুতন্ত্রের জন্য নৈতিকতা, উদ্ভাবন এবং 'বৈশ্বিক সমন্বিত চর্চার মাধ্যম' এ প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে এ সম্মেলনের আয়োজন করছে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় মডেল ইউনাইটেড নেশনস এসোসিয়েশন (আরইউমুনা)। বৃহস্পতিবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) বিকেল ৪টায় বিশ্ববিদ্যালয় শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ সিনেট ভবনে সম্মেলনের উদ্বোধন করেন সংগঠনটির সেক্রেটারি জেনারেল মো. মুজাহিদ তালুকদার। উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ও আরইউমুনার প্রধান উপদেষ্টা শাহ আজম। এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন আরইউমুনার উপদেষ্টা ও ব্যাংকিং এন্ড ইন্সুইরেন্স বিভাগের সহকারী অধ্যাপক হেমন্ত কুমার ভদ্র। আরইউমুনার সাবেক সেক্রেটারি জেনারেল শাহরিয়ার ইমন। ডেপুটি সেক্রেটারি জেনারেল মেহেদী হাসান শুভ। সেক্রেটারি জেনারেল মো. মুজাহিদ তালুকদার বলেন, বৈশ্বিক নিরাপত্তাহীনতা দূরীকরণ করে আন্তঃসীমান্ত ভ্রাতৃত্ব বজায় রাখার মাধ্যমে শান্তি রক্ষা করা এবারের ছায়া জাতিসংঘের লক্ষ্য। বর্তমান পৃথিবীর সবচেয়ে উদ্যোগের বিষয় হলো নিরাপত্তাহীনতা। গঠনমূলক আলোচনার মধ্য দিয়ে কীভাবে সংকটময় বিশ্বে শান্তি প্রতিষ্ঠা করা যায় ও বৈশ্বিক নিরাপত্তাহীনতা দূর করতে আন্তঃসীমান্ত ভ্রাতৃত্ব বজায় রাখার মাধ্যমে শান্তি রক্ষা করাই এবারের ছায়া জাতিসংঘের লক্ষ্য। রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য বলেন, এ সম্মেলনে অংশগ্রহণ করার ফলে একজন শিক্ষার্থীর সৃজনশীলতা বিকাশ ও ব্যাক্তি জীবনে উপকৃত হয়ে থাকে। আন্তর্জাতিক বিতর্ক চর্চার মাধ্যমে তারা অন্যের মতামতকে প্রাধান্য দিতে শেখে। একজন শিক্ষার্থী নেতৃত্বের গুণাবলি অর্জন করতে বিতর্ক চর্চার বিকল্প নেই। এই চর্চাটি আমাদের কারিকুলামের অন্তর্ভুক্ত করা উচিত বলে জানান তিনি। এদিকে জাতিসংঘের আদলে ৮টি কমিটি নিয়ে এবারের সম্মেলন আয়োজন করা হয়েছে। জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদ, উত্তর আটলান্টিক চুক্তি সংস্থা, জাতিসংঘ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক পরিষদ, জাতিসংঘ মানবাধিকার সংস্থা, আন্তজার্তিক নবায়নযোগ্য জ্বালানি সংস্থা, বাংলাদেশ বিষয়ক বিশেষায়িত পরিষদ, বিশ্ব ব্যাংক এবং আন্তর্জাতিক সংবাদ সংস্থা। এবারের সম্মেলনে স্কুল-কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়সহ দেশের ৬০টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে প্রায় ৩৫০ জন শিক্ষার্থী বিভিন্ন দেশের প্রতিনিধি হিসেবে অংশগ্রহণ করেন। ছায়া জাতিসংঘের কমিটিগুলো সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের জগদীশ চন্দ্র বসু একাডেমিক ভবন এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসিসি ভবনে পরিচালনা করা হবে। এদিকে, ১৮ ফেব্রুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট ভবনে বিকেল ৩টায় সম্মেলনের সমাপনী অনুষ্ঠিত অনুষ্ঠিত হবে। সমাপনী অনুষ্ঠানে বিজয়ী প্রতিনিধিদেরকে ক্রেস্ট প্রদান করা হবে। সম্মেলনটির মিডিয়া পার্টনার হিসেবে রয়েছে জনপ্রিয় অনলাইন পোর্টাল জাগো নিউজ ২৪ কম, যমুনা টেলিভিশন এবং রেডিও পার্টনার হিসেবে রয়েছে রেডিও কার্নিভাল। উল্লেখ্য, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় জাতিসংঘ ছায়া সংসদ একটি বিতর্ক সংস্থা। জাতিসংঘের অধিবেশনে যে ধারায় বিতর্ক হয় তার আদলেই দেশে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের নিয়ে জাতিসংঘের ন্যায় কমিটি গঠন করে ২০১৩ সাল থেকে বিতর্ক করে যাচ্ছে আরইউমুনা। দেশের বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের আন্তর্জাতিক উপায়ে বিতর্ক প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণে উপযোগী করাই আরইউমুনার মূল লক্ষ্য।
তারিফুল ইসলাম, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়