সংবাদদাতাঃ ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধি
ব্যস্ততম শহরগুলোর অন্যতম ব্রাহ্মণবাড়িয়া। এই শহরে নানানরকম মানুষের বসবাস। প্রত্যেকেই নিজ নিজ কর্মে ব্যস্ত। এরই মাঝে ভালো মানুষের সাথে সাথে প্রতারকও চলছে তাল মিলিয়ে। প্রতারকরা প্রতারণা করে হাতিয়ে নিচ্ছে কোটি কোটি টাকা। তেমনি এক দূধর্ষ প্রতারকের নাম শারমিন আক্তার। যিনি দুই সন্তানের জননী। বাড়ি: ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার কসবা উপজেলাধীন মনকাশাইর গ্রামের দক্ষিণপাড়া'র ভূইয়া বাড়ি। স্বামী: সানু মিয়া (সৌদি প্রবাসী) বাড়ি: আখাউড়া উপজেলাধীন ছয়ঘড়িয়া গ্রামে। . প্রতারক শারমিন আক্তারের কাজই ছিলো সম্পদশালী ব্যক্তিদের লক্ষ্য করে নিজের ফ্ল্যাট ও দোকান দেখিয়ে ব্যবসার সম্পর্ক গড়ে তোলা এবং সুযোগ বোঝে তাদের থেকে লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নেওয়া। পাওনাদারদের থেকে টাকার চাপ আসলে সব যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করে সেখান থেকে অন্যত্র চলে যাওয়া। আবারও সেখানে পূর্বের ন্যায় প্রতারণায় ব্যস্ত হওয়া। এভাবে পরিবর্তন করেছে নরসিংদী ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া সহ আরও কয়েকটি শহর। . নিজ এলাকা ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ৪বছর অবস্থান করে বিভিন্ন শ্রেণির লোক থেকে হাতিয়ে নিয়েছে প্রায় দুই কোটি টাকা। যার কিঞ্চিৎ বিবরণ তুলে ধরা হয়েছে আমাদের এই প্রতিবেদনে। . তার প্রতারণার স্বীকারগ্রস্থরা দিকভ্রান্ত হয়ে ঘুরছেন বিভিন্ন দিকে। সংসারে চলছে অভাব অনটন আর অশান্তি । একপর্যায়ে তারা প্রতারক শারমিনের গ্রামের বাড়িতে ছুটে গেলেও মিলেনি কোনো ভরসা। তাই তারা বাধ্য হয়ে প্রশাসনের দারস্থ হয়েছেন। তাদেরই একজন হলেন নাজাত ভূইয়া। তাঁর থেকে ফ্ল্যাট ও দোকানের প্রলোভন দেখিয়ে হাতিয়ে নিয়েছে ১২ লক্ষ টাকা। কিন্তু যেই ফ্ল্যাট আর দোকান দেখিয়ে বিভিন্ন মানুষ থেকে হাতিয়ে নিয়েছে প্রায় দুই কোটি টাকা সেই ফ্ল্যাটটাও যাওয়ার আগে গোপনে বিক্রি করে দিয়েছে। আর দোকানটা ছিলো ভাড়ায়। ইতিমধ্যে ভুক্তভোগী নাজাত ভূইয়া তাকে ধরিয়ে দিতে পারলে ১ লক্ষ টাকা পুরষ্কারের ঘোষণা করেছেন। তার প্রতারণার স্বীকার আরেকজন হলো আব্দুল্লাহ। যার থেকে ১২ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। আব্দুর রহমান নামের আরেক লোক থেকে নিয়েছে ১৪ লাখ। এমনিভাবে আব্দুল হক নামেরও এক ব্যক্তির কাছ থেকে হাতিয়ে নিয়েছে ১৪ লাখ টাকা। ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিশিষ্ট ব্যবসায়ী জনাব মাহবুব এর কাছে নিজেকে ঋণের অসহায়ত্ব বানিয়ে পর্যায়ক্রমে নগদ ২০ লক্ষ টাকা এবং তাঁর অগোচরে তাঁকে ব্যাংক গ্যারান্টেড বানিয়ে ১৯ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। এভাবে আরও অনেকের কাছ থেকে মিলিয়ে প্রায় দুই কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। . প্রতারণার স্বীকারগ্রস্থ কয়েকজনের সাথে কথা বলে জানা যায়, কারো কাছ থেকে ৪০ লক্ষ এবং কারো কাছ থেকে ১২ লক্ষ টাকা করে হাতিয়ে নিয়েছে। তবে ১২ লক্ষ টাকার পরিমাণটাই বেশি। . প্রত্যক্ষদর্শীর মতে প্রতারক শারমিন যখন বাহিরে বের হতো তখন হাত-মোজা, পা-মোজা ও বোরকা দিয়ে পুরো দেহাবৃত করে বের হতো। যেনো নিজেকে বোরকার আড়ালে চেনা না যায়। তথ্য নিয়ে জানা যায়, দেশের বাহিরে যাবার প্রস্তুতিও সব সম্পন্ন করে ফেলেছিলো কিন্তু তার নামে মামলা থাকায় সেটা আর সম্ভব হয়ে উঠেনি। তাই প্রশাসন সহ সকলের প্রতি এই প্রতারককে গ্রেফতার করার দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।