সংবাদদাতা: দেলোয়ার হোসাইন মাহদী (ব্রাহ্মণবাড়িয়া) প্রতিনিধি :
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইল উপজেলার নোয়াগাঁও ইউনিয়নের আইরল নোয়াবাড়ি গ্রামে জমি সংক্রান্ত বিরোধের জেরে এক বৃদ্ধকে হত্যাচেষ্টার ঘটনায় দায়ের করা মামলায় তিন বছর পর আদালত রায় দিয়েছেন।
ভুক্তভোগীর ছেলে ফরহাদ মিয়া জানান,
"২০২২ সালের ১২ ফেব্রুয়ারি দুপুরে পারিবারিক জমি বিরোধকে কেন্দ্র করে আমার বাবা আইরল ভূমি অফিসের পূর্ব পাশে মোবাইল টাওয়ারের নিচের সড়ক দিয়ে হাঁটার সময় ফারুক, রশিদ, খোকন, কাউসার, জলিল, বাবুলসহ একদল সন্ত্রাসী দলবদ্ধভাবে তার ওপর অতর্কিত হামলা চালায়। বাবাকে গুরুতর আহত অবস্থায় প্রথমে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর হাসপাতালে, পরে ঢাকায় ও ভারতে চিকিৎসা করাতে হয়।”
তিনি আরও জানান, “আমার বাবা এখনো চিকিৎসাধীন। ঘটনার পর থেকেই আমরা নানাভাবে ভয়ভীতি ও হুমকির মুখে আছি। মামলা চালিয়ে যাওয়ায় বাড়িতে এসেও হুমকি দেওয়া হয়েছে।”
ভুক্তভোগীর দাবি, অভিযুক্তদের সঙ্গে আগেও জমি সংক্রান্ত বিরোধ ছিল। এমনকি ২০০৯ সালে তাদের মধ্যে মীমাংসার লিখিত চুক্তিও (বনসাই) হয়েছিল যে ভবিষ্যতে আর কোনো বিরোধ হবে না। কিন্তু ২০২২ সালে আবারও সহিংসতায় জড়ায় তারা। এতে তারা আমার বাবাকে হত্যা চেষ্টা চালায়।
অবশেষে দীর্ঘ তিন বছর আদালতে বিচার প্রক্রিয়া শেষে গত মঙ্গলবার (৮ জুলাই) এ মামলার রায় ঘোষণা করেন আদালত। রায়ে মোট ১২জন আসামি থেকে তিনজন প্রধান আসামিকে কারাদণ্ড প্রদান করা হয়েছে।
ফারুক মিয়া (৩৫): ২ বছরের কারাদণ্ড
রশিদ মিয়া (৫০): ৪ বছরের কারাদণ্ড
জলিল মিয়া (৪০): ২ বছরের কারাদণ্ড
রায় ঘোষণার পরপরই রশিদ ও জলিলকে আদালতের ভেতর থেকে তাৎক্ষণিকভাবে গ্রেপ্তার করা হয়। অপরদিকে ফারুক এখনো পলাতক রয়েছে। তাকে ধরতে পুলিশের অভিযান অব্যাহত রয়েছে বলে জানিয়েছে প্রশাসন।
পরিবারের দাবি, জমির একাংশ বিক্রির সিদ্ধান্ত নিয়েই মূলত এই হামলা পূর্বপরিকল্পিতভাবে চালানো হয়। একইসঙ্গে ২০২০ সালে তাদের একটি গরু মারা নেওয়ার অভিযোগও রয়েছে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে।
বাদীপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট আক্কাস আলী বলেন, “আমি তিন বছর ধরে এই মামলাটির আইনি দায়িত্ব পালন করেছি। আলহামদুলিল্লাহ, শেষ পর্যন্ত মহামান্য আদালত ন্যায়বিচার দিয়েছেন। এতে বাদীপক্ষ সন্তুষ্ট।”