নিজস্ব প্রতিবেদক
অনলাইন ব্লকচেইন ডেভেলপমেন্ট প্রশিক্ষণ নামে অর্থ প্রতারণা করে যাচ্ছে “সামি খান (টেকনো সামী)” নামের এক প্রতারক। ব্লকচেইন ডেভেলপমেন্ট দিয়ে ফ্রিল্যান্সিং শিখানোর ভুয়া প্রতিশ্রুতিতে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগে উঠেছে তার নামে। তার ফাঁদে পড়ে দেশের বিভিন্ন জেলার শিক্ষার্থীরা প্রতারণার শিকার হয়েছেন বলে সামী খান ওরফে টেকনো সামির বিরুদ্ধে প্রতারণার অভিযোগ তুলেছেন ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীরা।
এই প্রতারনায় সহযোগী হয়ে কাজ করেন কিশোরগঞ্জের ''ইরফান হাসান সার্ফি'' এবং ''রিদওয়ান চোধুরী'' নামের দুই প্রতারক। নিজেদের ব্লকচেইন ডেভেলপার দাবি করলেও এরা আসলে ব্লকচেইন ডেভেলপমেন্ট তো দূরের কথা কোনো ডেভেলপমেন্ট এর ধারণাই রাখেনা। ভুলভাল সব তথ্য দিয়ে শিক্ষার্থীদের ভবিষ্যত নষ্ট করে যাচ্ছে।
ডেভেলপমেন্ট শেখানোর কথা বলে টাকা নিলেও এরা নিজেরা কোনো প্রোগ্রামিং ল্যাংগুজে ই পারেনা। প্রতারক সামি নিজেকে একজন প্রতিষ্ঠিত ব্লকচেইন ডেভেলপার এর পাশাপাশি নিজেকে গেম ডেভেলপার, এফিলিয়েট মার্কেটার, সিপিএ মার্কেটার, ট্রেডার বলে দাবিও করে থাকে এবং প্রচার করে থাকে সে সিঙ্গাপুরে পড়াশোনা করে। যা কোনটিও সত্য নয়। আসলে সে কখনো সিঙ্গাপুর যায় ই নি।
অন্যদিকে ''ইরফান হাসান সার্ফি'' নিজেকে টি-শার্ট ডিজাইনার, এবং ব্লককেই ডেভেলপার দাবি করার পাশাপাশি এটাও দাবি করে যে তিনি এল-ব্যাঙ্ক (L-Bank ) এ ডেভেলপার হিসেবে জব করে। এমন ভাবে নিজেদের নামে মিথ্যে ঢোল পিটিয়ে মানুষকে লোভনীয় সুযোগ দেখিয়ে অর্থ প্রতারণা করে যাচ্ছে। ব্লকচেইন ডেভেলপমেন্ট কোর্স হলেও ভর্তির পরে শিক্ষার্থীদের ক্যানভা শিখানো হয় এবং ক্লাস চলাকালীন বিভিন্ন কারণ দেখিয়ে একে একে শিক্ষার্থীদের বের করে দিয়ে কোনো রিফান্ড না দিয়ে ই কোর্স বন্ধ করে দেয়। তাছাড়া কোর্সে ভর্তি হওয়ার পর বিভিন্ন অফার দিয়ে পরে আরো টাকা হাতিয়ে নেয়। একটি কোর্সে এ ভর্তি হওয়ার পরে আরো অন্য কোর্সে ভর্তি হতে বলে। টুলস কেনার জন্য টাকা নেয়। স্পেশাল ব্যাচের কথা বলে মোটা অংকের টাকা নেয়। এমনকি শিক্ষার্থীদের থেকে টাকা ধার করে সেটাও আত্মসাদ করে।
সবশেষে প্রজেক্ট পার্টনার হওয়ার জন্য আরো বেশি টাকা হাতিয়ে নেয়। খোঁজ নিয়ে দেখা যায় প্রতারক সামি এর আগেও "টেকনো সামি Techno Sami" নামের একটি প্রতিষ্ঠানের নাম করে অনেক টাকার প্রতারণা করেছেন। মূলত সেখানে তার প্রতারণা ফাঁস হয়ে যাওয়ায় একবার গণধোলাই খেয়েছিলো। পরে এখন " বাইটক্র্যাফ্ট-ByteCraft Int" নামের একটি প্রতিষ্ঠানের নামে প্রতারণা চালাচ্ছে। প্রতারণার শিকার প্রায় পঁচিশ জনের বেশি শিক্ষার্থীরা আরো শিক্ষার্থীদের একত্রিত করছে এবং তাদের নাম মামলার প্রস্তুতি নিচ্ছে।