সুনামগঞ্জ প্রতিনিধিঃ আব্দুল্লাহ আল মারুফ
দোয়ারাবাজার থানার চাঞ্চল্যকর শিশু ইব্রাহিম খলিলুল্লাহ হত্যা মামলার রহস্য উদঘাটন, আসামি গ্রেফতার এবং আদালতে দোষ স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান। গত ০৭/১২/২০২৪ খ্রি: তারিখ বিকাল অনুমান ০৪.০০ ঘটিকার সময় ভিকটিম মোঃ ইব্রাহিম খলিলুল্লাহ (০৭) পিতা-ইদ্রিছ আলী, সাং-কুশিউড়া, ইউ/পি-০১নং বাংলাবাজার, থানা-দোয়ারাবাজার, জেলা-সুনামগঞ্জ কুশিউড়া সাকিনস্থ মনসুর আহমদ এর বাড়ীর উঠানে তাহার সহপাঠীদের সাথে লুকো চুরি খেলা করা অবস্থায় নিখোঁজ হয়। ভিকটিমের পরিবার তার সন্ধান না পাইয়া গত ০৮/১২/২০২৪ ইং তারিখ দোয়ারাবাজার থানায় সাধারণ ডায়রী নং-৩৪৩, তারিখ-০৮/১২/২০২৪ খ্রি: দায়ের করেন। সাধারন ডায়রী দায়েরের পর হইতে দোয়ারাবাজার থানা পুলিশ নিখোঁজ ভিকটিম মোঃ ইব্রাহিম খলিলুল্লাহকে খোঁজাখুজি করতে থাকে। খোজাখুজি করা অবস্থায় গত ০৯/১২/২০২৪ ইং তারিখ সকাল অনুমান ০৯.৩০ ঘটিকার সময় কুশিউড়া সাকিনস্থ জনৈক তাইজ উদ্দিন এর দরজা জানালা এবং চাল বা ছাদ বিহীন পরিত্যক্ত পাকা দালান ঘরের পশ্চিম পাশে পিছনের বারান্দায় ভিকটিম মোঃ ইব্রাহিম খলিলুল্লাহ এর মৃতদেহ পাওয়া যায়। ঘটনাস্থলের পারিপার্শ্বিকতায়, আলামত দৃষ্টে এবং ভিকটিমের শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাতের চিহ্ন পরিলক্ষিত হওয়ায় বিষয়টি পরিকল্পিত হত্যাকান্ড হিসেবে দোয়ারাবাজার থানা পুলিশের নিকট প্রতীয়মান হয়। পরবর্তীতে ভিকটিমের পিতা ইদ্রিছ আলী বাদী হইয়া অজ্ঞাতনামা আসামিদের বিরুদ্ধে থানায় এজাহার দায়ের করিলে দোয়ারাবাজার থানা পুলিশ নিয়মিত মামলা রুজু করেন। মামলা রুজুর পর হইতে সুনামগঞ্জ জেলার মাননীয় পুলিশ সুপার জনাব আ. ফ. ম. আনোয়ার হোসেন খান সহ উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের দিকনির্দেশনায় দোয়ারাবাজার থানার অফিসার ইনচার্জ জনাব মোঃ জাহিদুল হক এর নেতৃত্বে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই(নিরস্ত্র)/মুহাম্মদ আসলাম হোসেন সহ দোয়ারাবাজার থানা পুলিশের একটি টিম মামলার রহস্য উদঘাটনে নিরলসভাবে কাজ করতে থাকে। দোয়ারাবাজার থানা পুলিশের টিম একাধিকবার মামলার ঘটনাস্থল পরিদর্শনের একপর্যায়ে ভিকটিমের পিতা ইদ্রিছ আলীর মামী বেদেনা খাতুন (৩৪) স্বামী-মো: জিয়া, সাং-কুশিউড়া, ইউ/পি-১নং বাংলাবাজার, থানা- দোয়ারাবাজার, জেলা-সুনামগঞ্জ হত্যাকান্ডের সহিত জড়িত আছে মর্মে সন্দেহ হইলে গত ১৫/১২/২০২৪ খ্রি: তারিখ বিকাল ১৭.৪৫ ঘটিকার সময় তাহাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য দোয়ারাবাজার থানায় নিয়ে আসে। জিজ্ঞাসাবাদের একপর্যায়ে সে স্বীকার করে যে, গত ০২ মাস পূর্বে ওয়ারিস সম্পত্তি নিয়া ভিকটিমের পরিবার আসামি বেদেনা খাতুনের শ্বশুরের সাথে ঝগড়া করে এবং বেদেনা খাতুন ও তার স্বামীকে ভিকটিমের পরিবার মারধর করতে উদ্যত হয়। উক্ত ঘটনার জের ধরিয়া আসামি বেদেনা খাতুন ভিকটিমকে হত্যার জন্য পরিকল্পনা করতে থাকে এবং গত ০৭/১২/২০২৪ইং তারিখ বিকাল অনুমান ০৪.০০ ঘটিকার সময় ভিকটিম খেলাধুলা করা অবস্থায় সুকৌশলে ভিকটিমকে গেঞ্জি দ্বারা মুখ বেধে এবং রশি দ্বারা হাত পা বেধে আসামির দেবর মৃত নজরুল ইসলাম এর অব্যবহৃত একটি ঘরের কক্ষে নিয়া রাখে এবং গত ০৯/১২/২০২৪খ্রি: তারিখ অনুমান ০৩.৩০ ঘটিকার সময় তাহার শরীরের বিভিন্ন স্থানে জখম করত: গলা টিপে প্রাণে হত্যা করিয়া গুম করার উদ্দেশ্যে একই গ্রামের মোঃ তাইজ উদ্দিন এর দরজা জানালা এবং চাল বা ছাদ বিহীন পরিত্যক্ত পাকা দালান ঘরের পশ্চিম পাশে পিছনের বারান্দায় ফেলে রাখে। আসামি বেদেনা খাতুনকে হত্যা মামলায় বিজ্ঞ আদালতে সোপর্দ করা হইলে সে উক্ত ঘটনার বিষয়ে বিজ্ঞ আদালতে দোষ স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করে।