আব্দুল্লাহ আল মারুফ, দোয়ারাবাজার (সুনামগঞ্জ)
সুনামগঞ্জের দোয়ারাবাজারে কিশোরগ্যাং কর্তৃক তানভীর হোসেন (১৯) নামে এক কিশোরকে মারধর করে গুরুতর আহত করে মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নেয়ার অভিযোগ উঠেছে।
গত ( বুধবার) ২৩ এপ্রিল ৬ জনকে আসামী করে দোয়ারাবাজার থানায় এবিষয়ে একটি অভিযোগ দায়ের করেন আহতের পিতা শফিকুল ইসলাম ।
আহত তানভীর হোসেন (১৯) উপজেলার নরসিংপুর ইউনিয়নের পূর্বচাইরগাঁও গ্রামের বাসিন্দা।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, আহত কিশোরের পিতা শফিকুল ইসলাম গত ১৪ এপ্রিল দোয়ারাবাজার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা'র কার্যালয় হতে সোনালী চেলা (চাইরগাঁও -সারপিনপাড়া) খেয়াঘাটটি ইজারা নেন। পরে বাঁশের চাটাই দিয়ে খেয়াঘাটে মানুষ ও মোটরসাইকেল পারাপারের কাজ শুরু করেন।
এতে ২১ এপ্রিল সোমবার রাতে অভিযুক্ত তারেক হোসেন,আহাদ আলী ও দিহান এই তিনজন মোটরসাইকেল যোগে নদী পারাপার হতে আসেন এবং খেয়া ভাড়া না দিয়ে জোরপূর্বক চলে যেতে চান। এসময় তানভীর হোসেন খেয়াপারের ভাড়া নিতে গেলে তারেক, আহাদ,ও দিহান উত্তেজিত হয়ে পড়ে।
ভাড়া নিয়ে দুপক্ষের মাঝে বাকবিতন্ডার এপর্যায়ে তারেক ৩০ টাকা ভাড়ার পরিবর্তে ২০ টাকা নিতে জোর করে। তানভীর হোসেন ২০ টাকা ভাড়া না নেওয়ায় তারেক,আহাদ ও দিহান হুমকি দিয়ে যায় যে, সময় সুযোগ মতো পেলে তাদের সাথে তর্কবিতর্ক ও ভাড়া আদায়ের স্বাদ মিটাইয়া দিবো বলে হুমকি প্রদান করে চলে যায়।
এতে ঘটনার দিন ২২ এপিল ( মঙ্গলবার) রাত ৮ টার দিকে বিবাদী তানভীর হোসেন তার বন্ধু নুর চাঁনকে সাথে নিয়া স্থানীয় নরসিংপর বাজারে তার মামা ব্যাবসায়ী সৈয়দ আহমদ'র কাছে থেকে ৫০ হাজার টাকা নিতে আসেন। মামা সৈয়দ আহমদ'র কাছ থেকে ভাগিনা তানভীর হোসেন রাত ৯ টার দিকে নগদ ৫০ হাজার টাকা প্যান্টের পকেটে করে বাড়ি যাওয়ার উদ্দেশ্যে মোটরসাইকেল যোগে রওয়ানা দিলে অভিযুক্ত আসামী
১। শ্রীপুর গ্রামের মজই মিয়া'র পুত্র
তারেক হোসেন (১৯),২।
সামছুল ইসলাম'র পুত্র আহাদ আলী (২০),
৩। নরসিংপুর গ্রামের
আব্দু নুর এর পুত্র দিহান মিয়া (২০),৪।
মন্টু মিয়া'র পুত্র নয়ন মিয়া (২১), ৫।
সুনাইত্যা গ্রামের রহমত আলী পুত্র কামরুল ইসলাম (১৯),৬।
নরসিংপুর গ্রামের জমির আলী'র পুত্র হুমায়ুন আহমদ (২০)।
তানভীর হোসেন'র রাস্তা গতিরোধ করে মোটরসাইকেল থেকে টেনে হেঁচড়ে মাটিতে ফেলে আতর্কিত হামলা ও মারধর করে। এসময় তানভীর কে বাঁচাতে নুর চান সামনে এগিয়ে আসলে দিহান ও হুমায়ুন আহমেদ তাকে ধরে আটকে রাখে ও তারেক হোসেন তানভীর হোসেনের প্যান্টের ডান পকেটে থাকা ৫০ হাজার টাকা ছিনিয়ে নেয় এবং আহাদ আলী বাম পকেটে থাকা এন্ড্রয়েড ফোন ২৭ হাজার টাকার মূল্যের ( ওয়ান প্লাস) জোরপূর্বক ছিনিয়ে নেয় এবং তাদের সাথে থাকা মোটরসাইকেলটি ভাংচুর করে ক্ষতিসাধন করে
আহত তানভীর হোসেন ও অভিযোগ সূত্রে আরো জানা যায়, এসময় অভিযুক্ত কিশোর গ্যাং এই সদস্যরা
তানভীর হোসেন ও নুর চানকে বলে যায় যে, এই ঘটনার সম্পর্কে কাউকে যেনো কিছু না বলে। যদি এবিষয়ে লোক জানাজানি করা হয়. তাহলে তারা রাস্তা দিয়ে চলাচল কালে যে-কোনো দিন হত্যার স্বীকার হতে পারে।
এদিকে এ ঘটনার পর থেকে এলাকায় জনমনে আতঙ্ক বিরাজ করছে। স্থানীয়রা বলছে অভিযুক্ত কিশোররা সবসময় বেপরোয়া ভাবে এলাকায় চলাফেরা করে।দিনের বেলায় কারো সাথে একটা বিষয় নিয়ে বাকবিতণ্ডা হলেও রাতের বেলায় তারা টিম নিয়ে প্রতিশোধ নেয় এমন অনেক ঘটনা অতীতে ও ঘটেছে।
তাই তাদের এই বেপরোয়া চলাফেরায় এলাকার মানুষজন অতিষ্ঠ। এলাকবাসী দ্রুত তাদের আইনের আওতায় এনে এলাকাকে কিশোর গ্যাংদের হাত থেকে রক্ষা করতে স্থানীয় পুলিশ- প্রশাসনের নিকটা দাবি জানান।
এবিষয়ে জানতে চাইলে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা উপপরিদর্শক (এসআই) আব্দুল জলিল জানান,প্রাথমিক ভাবে তদন্তে ঘটনার সত্যতা পাওয়া গেছে। হয়তো অভিযুক্তদের সবাই ঘটনায় জড়িত নয় তবে ঘটনা ঘটেছে সত্য। আহত কিশোরের চোখের দু'পাশে জখম হয়েছে। বিষয়টা আইননুসারে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।