মোঃ হাবিব, ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধিঃ
ঠাকুরগাঁওয়ে দায়ন ঋষি (৪৫) নামে এক আদিবাসী নারীকে পিটিয়ে হত্যার পর গাছে ঝুলিয়ে রাখার অভিযোগ স্বজনদের। আজ বুধবার (২২ মে) সকালে জেলা শহরের পৌর এলাকার ৯ নং ওয়ার্ড পরষিদপাড়ার একটি লিচু গাছে ওই নারীর লাশ ঝুলে থাকতে দেখেন স্থানীয়রা। পরে পুলিশে খবর দিলে ঘটনাস্থল থেকে পুলিশ নিহতের লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠায়। নিহত দায়ন ঋষি, বিশু ঋষির স্ত্রী । দায়ন ঋষির ২ ছেলে ও একজন কন্যা সন্তান রয়েছে। নিহতের স্বজন ও স্থানীয়দের অভিযোগ, গেল সোমবার (২০ মে) পরিষদপাড়ার লিটনের বাসায় চুরির ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় নুর আলমসহ তার লোকজন পরদিন চোর সন্দেহে একই গ্রামের দয়ান ঋষির ছোট ছেলে রাজেন (১৩) ও একই গ্রামের মৃত যোগেন এর ছেলে সঞ্জিত (১৫) কে তারা বাসায় আটক করে রাখে। পরে লিটনের আত্মীয় আমজাদসহ কয়েকজন মিলে ওই ওয়ার্ডের কাউন্সিলর দোলন কুমার মজুমদারের সাথে দেখা করে চুরির বিষয়টি অবগত করেন। এসময় কাউন্সিলর তাদের পুলিশ প্রশাসনের সহযোগীতা নেয়ার পরামর্শ দেন। কিন্তু বাড়ির মালিক লিটন কাউন্সিলরের কথা না শুনে চুরি ঘটনায় কয়েক লক্ষ টাকা ও কয়েক ভরি স্বর্ণ অলংকার খোয়া গেছে দাবি করে আটকৃতদের কয়েক দফায় বেধরক মারপিট করে লিটনসহ তার লোকজন। পরবর্তিতে অভিভাবকদের ডেকে আটককৃতদের ছেড়ে দেয়। তারা আরো অভিযোগ করে বলেন, ওই দুই কিশোরকে ছেড়ে দেয়ার পর ওই দিন রাতে অজ্ঞাতরা রাজেনের মা দায়ন ঋষিকে বাড়ি থেকে ডেকে নেয় চুরির বিষয়টি সমাধানে। সে বাসায় না ফিরলে অনেক খোঁজাখুঁজি করেন স্বজনরা। পরে আজ বুধবার (২২ মে) সকালে স্বজনরা তার লাশ গাছের ডালে ঝুলতে দেখে। লাশ দেখে পুলিশকে খবর দিলে পুলিশ এসে লাশ উদ্ধার করে মর্গে পাঠায়। এসময় নিহতের স্বজনরা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, রাজেনকে আটক করে লিটন ও তার লোকজন বেধরক মারপিট করলে ভয়ে বাধ্য হয়ে স্বীকার করে সে চুরি করেছে। নগদ টাকা ও স্বর্ণ তার মায়ের কাছে রেখেছে তাই তার মাকে ডেকে পিটিয়ে হত্যার পর গাছে ঝুলিয়ে রাখে। এ হত্যার সাথে জড়িতদের দ্রুত আইনের আওতায় আনার দাবি জানান। চুরি ঘটনার বিষয়ে লিটনের সাথে যোগাযোগ করা হলে তাদের কাউকে পাওয়া যায়নি। বাসায় তালা বন্ধ করে অন্যত্র চলে গেছে। এ বিষয়ে ওই ওয়ার্ডের কাউন্সিলর দোলন কুমার মজুমদার জানান, চুরির ঘটনায় দুই কিশোরকে আটকের পর মারপিট করা হয় সেই বিষয়টি জানানো হলে পুলিশের সহযোগীতা নেয়ার পরামর্শ দিলেও তারা শুনেনি। পরে সকালে জানতে পারি এক কিশোরের মা গাছের ডালে ঝুলন্ত অবস্থায় রয়েছে। নিশ্চই বিষয়টি তদন্ত করে ব্যবস্থা নিবেন পুলিশ। আর সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এবিএম ফিরোজ ওয়াহিদ জানান, নিহতের লাশ ময়না তদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়েছে। এটি হত্যা নাকি আত্মহত্যা। নিহতের ঘটনায় এখনো কেউ লিখিত অভিযোগ করেন নি। অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেয়া হবে।